‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্প’র স্থবিরতায় কৃষি ও পরিবেশ ভয়াবহ হুমকির মধ্যে পড়েছে। ফলে ধান, ও মাছসহ অন্যান্য আবাদ বিপর্যয়ের সম্মুখিন হচ্ছে। ধান আবাদের মৌসুমে খালে পানি স্বল্পতা, আবার ভারি বর্ষণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ সংকট উত্তরনে কৃষি, কৃষক ও পরিবেশ রক্ষায় সিআইপির অভ্যন্তরে জলবাদ্ধতা দূরীকরণে ডাকাতিয়া নদী ও বোরোপিটসহ সকল খাল খননে ৫ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১ ডিসেম্বর রোবরার সকালে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে ডাকাতিয়া নদী ও খাল খনন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে এই উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন দুলাল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ৬ উপজেলার ৫৮ হাজার হেক্টর (গ্রস) জমি ও ২৮ হাজার হেক্টর আবাদী জমি নিয়ে একশত কিলোমিটারের পরিধির এই বাধ ১৯৭৮ সাল থেকে প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হয়। বাঁধের উদ্দেশ্য ছিলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ করে সেচের মাধ্যমে এক ফসলী জমিকে দুই-তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করে অধিক ফসল উৎপাদন করে এই অঞ্চলের খাদ্য ঘাটতি দূর করা।
কিন্তু বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং সেচের মাধ্যমে বোরো (ইরি) আমন উৎপাদন বেড়ে খাদ্য ঘাটতি আপেক্ষিক অর্থে দূর হলেও সিআইপি বাঁধ আর্শিবাদের পরিবর্তে এখন অভিশাপে পরিণত হতে চলেছে। এর কারণ নদীতে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, অপর্যাপ্ত স্লুইস গেট, ইনলেট-আউটলেটে বড় ধরনের ত্রুটির কারণে ও অনিয়ম দূর্নীতির ফলে সিআইপি বাঁধ প্রায় অকার্যকর।
বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ সিআইপির অভ্যন্তরে পানি প্রবাহের প্রধান ক্যানেল ডাকাতিয়া নদী গত প্রায় ১০০ বছর এবং বোরোফিট খালসহ শত খাল গত ২৫-৩০ বছরেও খনন বা সংস্কার না করায় নাব্যতা হারিয়ে বৃষ্টি হলেই পানি ধারণ ক্ষমতা না থাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ বছর টানা বষর্ণে ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে রোপনের জন্য প্রস্তুতকরা বীজতলা ও রোপন করা আমন ধান সম্পূর্ণরুপে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হাজারও কৃষক, বর্গা ও ইজারা চাষী এবং মৎস্য চাষিরা।
তাই অবিলম্বে ডাকাতিয়া নদী ও সকল খাল খনন (সংস্কার) করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, আমন ধান জলাশয়, পুকুরে মাছ চাষীদের ও মৎসজীবিদের রক্ষা করা, বোরো (ইরি) মৌসুমে পানি সংকট নিরসন, ডাকাতিয়া নদী ও বোরোফিট খাল ইজারা বন্ধ ও দখলমুক্ত করে কচুরিপানা পরিস্কার, মাছ, পানি পরিবেশ রক্ষা, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত সি.আই.পিবাসীদের চালসহ নিত্য পণ্যের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা, কৃষি ঋণ মওকুফ করা, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য আমাদের ৫ দফা দাবি। দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে সিআইপি আর্শীবাদে পরিণত হবে ও ডাকাতিয়া নদী তার হারানো যৌবন ফিরে পেলে দেশীয় মাছ উৎপাাদন উল্লেখ যোগ্য হারে বাড়ার প্রত্যাশা করা হয়েছে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মামনুর রশিদ পাঠান সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগ্রাম কমিটির যুগ্মআহ্বায়ক মো: মন্তাজ সরকার, রহিমা আক্তার পলি, রিয়াজ উদ্দিন ফরিদী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ফরহাদসহ অন্যঅন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সংকট দূরীকরণে ৪ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :