শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম

প্রধান শিক্ষক পলাতক থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম

প্রধান শিক্ষক পলাতক থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন

প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

একজন সহকারি শিক্ষক হাজিরা খাতা অফিস কক্ষের বাইরে বের করায় একই স্কুলের অফিস সহকারি ফাতেমা জান্নাত তাকে টানা হেচড়া করে লাঞ্ছিত করছেন এমন একটি ভিডিও কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এই ভিডিওটি জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন হত্যা মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে থাকার পরও শিক্ষক হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করে চলেছেন। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে কয়েকজন সংবাদকর্মী ওই বিদ্যালয়ে গেলে সহকারি শিক্ষক আজিজুর রহমান-১ হাজিরা খাতায় সাংবাদিকদের দেখানোর জন্য অফিসের বাইরে বের করেন। এ দৃশ্য দেখতে পেরে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী অফিস সহকারি ফাতেমা জান্নাত ছুটে এসে ওই শিক্ষককে ধরে টানা হেচড়া করে লাঞ্ছিত করেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্থানীয় এমপি আলহাজ্জ দবিরুল ইসলামের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে বিগত ১৪ বছরে স্কুল ফাঁকি দিয়ে রাজনৈতিক সভা সমাবেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। নিয়মিত বিদ্যালয়ে না গিয়ে দলীয় কর্মকান্ডে প্রায় সময়ে ব্যস্ত থাকতেন। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ওই বিদ্যালয়ে ৪টি পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ২০২৪ সালে লোক নিয়োগ দিয়েছেন। এসব নিয়োগের এক টাকাও বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা করা হয়নি।

এদিকে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থানীয় এমপি আলহাজ দবিরুল ইসলাম ও তার ছেলে মাজহারুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার হলে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনিও আত্মগোপনে যান। এতে করে একদিকে যেমন বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে। অপরদিকে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করা নিয়ে অহরহ ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা।

এ ব্যপারে হলদিবাড়ী গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত থাকেন না। গত ১৭ বছর ধরে স্কুলটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কর্মচারি বা শিক্ষক নিয়োগের দুটি টাকাও স্কুলের ফান্ডে জমা নেই। এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ আছে। পরে তিন লাখ টাকা দিয়ে মিটিয়ে ফেলেন।

নজরুল ইসলাম নামে অপর একজন বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রায় ৩ মাস ধরে স্কুলে আসেন না। রাতের বেলায় এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান।

একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আজিজুর রহমান-১ বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলটিতে কোন ডিসিপ্লিন নাই। যে যার মতো করে স্কুলে আসছে, আর যে যার মতো ফিরে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী ফাতেমা জান্নাত অফিস সহকারি। তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে আমার শার্টের কলার ধরেছেন। আমাকে লাঞ্চিত করেছেন। আমি ইউএনও’র কাছে বিচার দিয়েছি।

হলদিবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বিগত তিন মাস ধরে আমরা স্কুলে আসছি-যাচ্ছি। কিন্তু ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসেন না। অন্যান্য বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ে এখনো শুরু হয়নি। অনেকে এই স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। আমরা এ নিয়ে হতাশায় আছি।

অনুমতি না নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করায় সাংবাদকর্মীদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন হলদিবাড়ী বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আজিজুর রহমান-২। তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছের মানুষ বলে জানা গেছে। তিনি নিজেকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাবি করছেন। 

অপরদিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, হাজিরা খাতা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী অফিস সহকারি ফাতেমা জান্নাত লাঞ্চিত করছেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আজিজুর রহমান-১ কে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

পলাতক আসামি হলদিবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আলী শাহরিয়ার বলেন, যেহেতু ওইি বিদ্যালয় বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেহেতু শীঘ্রই বিদ্যালযটি পরিদর্শন করব। বিদ্যালয়টি ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক পরিচালিত যেহেতু সেক্ষেত্রে দেখার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী একজন সহকারি শিক্ষকের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমি তাদের ডেকেছিলাম। তারা এসেছিলো। তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!