ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হয়েছে মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহ। সারাদিন কুয়াশায় আকাশ ঢাকা থাকায় বিরাজ করছে কনকনে ঠান্ডা। সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছেনা কোন কোনদিন। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল চারদিক। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন দরিদ্র-শ্রমজীবী মানুষ। গরম কাপড়ের দোকান গুলেতে ভিড় বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষজনের।
বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল চারদিক। বাজার ও রাস্তা-ঘাট ছিল একেবারে ফাঁকা। কুয়াশার কারণে বিভিন্ন সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতের তীব্রতার জন্য নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছে। ঠান্ডার কারণে রিক্সা ও অটোচালকদের জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
রিক্সা চালকরা বলছেন, ঠান্ডার কারণে মানুষজন রিকশায় উঠতে চায় না। এ কারণে আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। তাই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হানিফ কোচের চালক মজিবর রহমান বলেন, অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে রাস্তায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। অনেকটা জীবনের ঝুকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
হাজীপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, কুয়াশার কারণে সকালে কিছুই দেখা যায় না। সূর্য ওঠে অনেক দেরিতে। সকালে বাচ্চাদের কোচিংয়ে নিয়ে যেতে কষ্ট হয়। এছাড়াও সন্ধ্যার পরপরই প্রচন্ড ঠান্ডায় বাইরে থাকা যায় না।
হঠাৎ কনকনে ঠান্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা সর্দি কাশিসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে আসন সংখ্যার ৩/৪ গুন বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাজ্জাদ হায়দার শাহীন জানান, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই শিশু। এসব শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকদের। পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে শুক্রবার দিনের তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকায় চাষীরা আকাশের দিকে তাকিয়ে অবস্থা নিরুপন করেন। অনেক সময় ধারনা ভূল হওয়ায় চাষীরা ফসল নিয়ে বিপদে পড়েন। তিনি বলেন, এখন আর ধারনা করে ক্ষেতে চাষাবাদ করার সময় নেই। সবাই আধুনিক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।কৃষকদের হাতেও এখন স্মার্ট ফোন। তাই আবহাওয়ার সঠিক অবস্থা নিরুপন করার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলায় একটি আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা সময়ের দাবি।
শীত মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, “ঠাকুরগাঁওবাসীকে শীতের তীব্রতা হতে বাঁচাতে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার কম্বল ও ২০ লক্ষ টাকার চাহিদা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে শীতার্ত মানুষকে সহায়তা করা হবে।