জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারে এবার বেড়েছে বীজ আলুর দাম। উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ আলু না পেয়ে কৃষকরা ছুটছেন স্থানীয় খোলা বীজ আলু কিনতে। এতে করে উচ্চ ফলনশীল জাতের ফলন কম হওয়ার সম্ভবনাও দেখা দিচ্ছে। বাজারে বিএডিসি, ব্র্যাক, এসিআই, ইস্পাহানী, সুপীম (হীরা) ও ইউন কোম্পানীর আলুর বীজের চাহিদা বেশি থাকলেও সিন্ডিকেটের কারণে তা পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষি বিভাগ বলছে, খোলা বীজ যেকোন কৃষক তার বাড়িতে আলু রেখে বীজে পরিণত হলে রোপণ করে উদ্বৃত্ত বীজ বিক্রি করেন।
আক্কেলপুর কলেজ বাজারে আজ শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের স্থানীয় খোলা বীজ আলু নিয়ে এসে বিক্রি করছেন। এসব বীজের বস্তায় কোনো কোম্পানির মোড়ক নেই বা উচ্চ ফলনশীল ফলন হবে তারও কোনো নিশ্চিয়তা নেই। বিক্রেতারা ভালো ফলন হবে বলে বীজ ক্রেতাদের কাছে প্রতি মন ৪শ থেকে ৫শ টাকা কমে বিক্রি করছেন। এসব বীজের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় জাতের পাকড়ি, লাল পাকড়ি, তেল পাকড়ি, ভুটান, জামআলু ও সাদাগুটিসহ বিভিন্ন জাতের খোলা বীজ আলু। বস্তার পাশাপাশি ডালিতে পরসা সাজিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৬১২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯৮১০ মেট্রিক টন আলুর বীজের চাহিদা ছিল। এখন আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শেষ। এ কারণে পুরোদমে আলুর চাষ শুরু হয়েছ এবং গত মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে আলুর বীজ নিয়ে নিয়মিত তদারকি করছে।
পজেলার গড়িমসাড়া গ্রামের খোলা বীজ আলু বিক্রেতা বিলাশ চন্দ্র বলেন, আমি একজন কৃষক আমার জমিতে আলু চাষের পরে উদ্বৃত্ত বীজ আলু আক্কেলপুর কলেজ বাজারে বিক্রি করতে এসেছি। মন প্রতি ৩হাজার ২শ টাকায় বিক্রি করেছি।
রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের কানুপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল উদ্দীন বলেন, উচ্চ ফলনশীল বীজ না পাওয়ায় স্থানীয় খোলা জাতের বীজ আলু কিনতে এসেছি। কিছু জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ আলু রোপন করেছি। উফসি জাতের বীজ আলুর বেশি দাম হওয়ায় আমি আর কিনতে পারিনি। খোলা বাজারে বীজ আলুর দামও চড়া। যা কৃষকের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। সর্বোচ্চ দাম হওয়া উচিত প্রতি মন ২ হাজার ৫শ টাকা। তাহলে কৃষকেরা কিছুটা লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ আলুর চাহিদা ছিল। দাম কম হওয়ায় কৃষকরা স্থানীয় খোলা জাতের বীজ আলু কিনছেন। এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হবে।