শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম

অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল মহেশপুরের উকড়ির বিল

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম

অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল মহেশপুরের উকড়ির বিল

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

প্রকৃতিতে জানান দিয়েছে শীত। এ ঋতু শুধু রিক্ততা-বিষণনতা নয়, সঙ্গে নিয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। মূলত উত্তর মেরুর দেশগুলোর প্রকৃতি যখন পাখির জন্য প্রতিকূল হয়ে ওঠে তখন অপেক্ষাকৃত অনুকূল পরিবেশ পেতে এসব অঞ্চলের পাখি অতিথি হয়ে চলে আসে আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাওড়, বিল, জলাশয়, লেক ও চরাঞ্চলে। পুরো শীত
মৌসুমজুড়ে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে এসব অঞ্চল।

শামুখ ভাঙ্গা, হাসপাখি, বক, রাঙা ময়ূরী, ছোট স্বরালী, সারশ, গাঙচিল, পানকৌড়ি, বকসহ নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশী কয়েক হাজার পাখি। কখনও তারা দলবেঁধে জলকেলি খেলতে আবার কখনও মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াতে ব্যস্ত। কখনও আবার ব্যস্ত মাছ শিকারে। ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি পাখির এমন বিচরণ চোখে পড়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী করিঞ্চা গ্রামের উকড়ি’র বিলে।

শীতে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিলটি। বিশাল জলরাশির মাঝে মাঝে শাপলা, শালুক আর পদ্মপাতা জন্মেছে অনেক আগে থেকেই। একটু নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্যের
আশায় পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিচ্ছে বক, রাঙা ময়ূরী, ছোট স্বরালী, সারশ, গাঙচিল, পানকৌড়ি, বকসহ নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পাখি।

জানা যায়, পাখিরা প্রতিবছর শীতের শুরুতেই ভিনদেশ থেকে ডানায় ভর করে এখানে আসে একটু নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্যের আশায়। পাখিদের আগমনে উকড়ি’র বিল এখন অতিথি
পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়। উকড়ি বিলের আয়তন প্রায় ২২৫ একর। এই বিলে বর্তমানে পাখি রয়েছে ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, করিঞ্চা গ্রামের উকড়ি বিলের জলাশয় সেজেছে এক নতুন সাজে। শীতে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিল। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়াভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করে দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীদের বিলের পানিতে ঘুরে ঘুরে পাখি দেখতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা। বিল পাহারার দায়িত্বে থাকা লোকগুলো দৃষ্টি রাখছে কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে। পাশের গ্রাম থেকে বিলে ঘুরতে আসা সাব্বির হোসেন বলেন, উকড়ি’র বিলের চারপাশে
শাপলা, আর পদ্মপাতা জন্ম নিয়েছে অনেক আগে। সেখানেই নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছে পাখিরা। দিনভর বিলের বিভিন্ন প্রান্তে শামুক ও মাছ শিকার করে পাখিরা কলকাকলিতে
মুখরিত করে রাখে পুরো এলাকা। পাখির কিচিরমিচির শব্দ মন কাড়ে পাখি প্রেমীদের। এই দৃশ্য দেখতে প্রায় প্রতিদিন আসি। এখানে ঘোরার জন্য রয়েছে নৌকার ব্যবস্থাও।

ভবনগর গ্রামের প্রকৃতি প্রেমী নাজমূল হোসেন জানান, এই বিলে পাখিদের ওপর কোনো অত্যাচার হয় না। যার কারণে শীত প্রধান দেশ থেকে এই মৌসুমে বেশি পাখি আসে। এই শীতে এখানে গাঙচিল, ডঙকুর, সড়াইল, কাইয়ুমসহ আরও নাম না জানা অনেক পাখি দেখা যায়।

বিলের পাহারাদাররা বলেন, বিলে যখন মাছ চাষ হত না তখন শিকারিরা পাখি শিকার করতে আসতো। কিন্তু যখন মাছ চাষের আওতায় আসে এবং কবীর হোসেন ইজারা নেয় তারপর থেকে
শিকারিরা আর পাখি শিকার করতে আসে না। কবীর ভাইয়ের নির্দেশ,যদি কেউ পাখি শিকার করতে আসে তাহলে বাধা দিয়ে প্রশাসনকে জানাতে। জায়গাটা নিরাপদ হওয়ায় শীতে
এখানে অনেক পাখি আসে। হাঁসপাখি, ডঙকুর, কাঁদাখোঁচা পাখিসহ ১৫/২০ রকমের পাখি আসে।

উকড়ির বিলের ইজারাদার কবীর হোসেন বলেন, নিজের ভালো লাগার জায়গা থেকে পাখিদের এই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে যখন বিদেশি পাখিগুলো আসতো, তখন
অনেক পাখি-শিকারি আসতো,পাখি শিকার করতো। তখন চিন্তা করি, শিকার বন্ধ না করলে পাখিগুলো নিরাপদ আশ্রয় মনে করবে না। এরপর আমি ব্যবস্থা নিয়ে শিকারিদের আসা বন্ধ
করি। এখন পাখিদের কেউ একটি ঢিলও মারতে পারে না। নিরাপদ আশ্রয়ের কারণে পাখিগুলো শুধু শীতকালে নয় এখন সারা বছর এই বিলে থাকতে শুরু করেছে ।

তিনি আরও বলেন, এই বিলে ১৫ থেকে ২০ প্রজাতির পাখি বসবাস করছে। শীতের এই মৌসুমে পাখিগুলো বিলে আসে। এখানে নিরাপদ এবং পর্যাপ্ত খাবার থাকায় অনেক পাখি গরমকালেও এই জায়গা ছেড়ে যায় না। বিলে আশেপাশে সবুজ থাকলে তারা বেশি স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে। পাখিগুলো সন্ধ্যা হলেই পদ্মপাতার আড়ালে এবং আশেপাশের গাছে থাকে সকাল হলেই আবার বিলে চলে আসে। পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করতে পেরে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই বিলটি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত হবে।
 

আরবি/জেডআর

Link copied!