শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নাজমুল হুদা নয়ন, শেরপুর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম

মৃত ব্যক্তির ইচ্ছে পূরণে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে

নাজমুল হুদা নয়ন, শেরপুর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম

মৃত ব্যক্তির ইচ্ছে পূরণে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চারদিকে বাজছে সানাইয়ের সুর। উলুদ্ধনী দিচ্ছেন শতশত নারীরা। পুরোহিত পাঠ করছেন মন্ত্র। পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে বিয়ের আসর। এক পলক দেখার জন্য ভিড় করছেন অনেকেই। সনাতন ধর্মালম্বীদের রীতি অনুযায়ী গায়ে হলুদ, আদিশ্রাদ্ধ, অধিবাস, বিয়ের আয়োজনের কোনো কিছুর যেনো কমতি নেই। তবে এত কিছু আয়োজন করা হয়েছে শুধু একটি বট আর পাকুড় গাছের বিয়েকে ঘিরে।

বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর বগুড়া শেরপুরের পৌর এলাকায় থানা রোড সংলগ করতোয়া নদীর তীরে, হরিতলা কালীমাতা মন্দির প্রাঙ্গনে এই বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

সকাল থেকেই শুরু হয় এই বিয়ের কার্যক্রম, চলে রাত পর্যন্ত। বটপাকুড়ের বিয়েতে বটগাছকে কনে আর পাকুড় গাছকে বর হিসেবে সাজানো হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী বিয়েতে কনের বাবা হিসেবে প্রদীপ দাস কন্যাদান করেন আর ছেলের বাবা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিমল দাস। মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পুরোহিত অমিত তরফদার হোদল। বিয়েতে উপস্থিত সকলের জন্য আয়োজন করা হয় নিরামিষ খাবারের।

বিগত কয়েক বছর আগে শহরের গোসাইপাড়া এলাকার রিনা দাস নামে এক ধর্মপ্রাণ মহিলা, সন্তান না থাকায় করতোয়া নদীর তীরে হরিতলা কালিমাতা মন্দির প্রাঙ্গনে গাছ দুইটিকে রোপণ করে, নিজের সন্তানের মত লালন-পালন শুরু করেন। ইচ্ছে ছিল গাছ দুইটি বড় হলে মা হিসেবে ধুমধাম করে তাদের বিয়ে দিবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গেলো বছর পরলোকেগমণ করে রিনা রানী দাস। তার এই ইচ্ছে পূরণ করতে তার বোনেরা, তার স্বামী এবং পরিবারের সদস্যরা এই বট ও পাকুর গাছের বিয়ের আয়োজন করেন।

মৃত রীনা দাসের স্বামী প্রদীপ দাস বলেন, আমার স্ত্রীর মারা যাওয়ায় আগে ইচ্ছে ছিলো. তার হাতে লাগানো এই বট-পাকুড় গাছের বিয়ে দিবেন, দিন তারিখও ঠিক হয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ তিনি মারা যাওয়ায়, এক বছর পর তার ইচ্ছে পূরণ করতেই এমন আয়োজন করা হয়।

তার বোন রানু দাস, গীতা রাণী দাস ও গোলাপী রানী দাস বলেন, আমার বোনের কোন সন্তান ছিলো না, সে এই গাছ দুটিকে নিজের সন্তানের মত ভালোবাসতো। তিনি মা হিসেবে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমরা বোনের আত্বার শান্তি কামনায় তার মনেই ইচ্ছে পূরণ করতেই ধুমধাম করে এই বট পাকুড় গাছের বিয়ে দিলাম।

পুরোহিত অমিত তরফদার হোদল বলেন, বট-পাকুর গাছ বা আমলকি গাছের বিয়ের রীতি প্রচলিত আছে যুগ যুগ থেকে। এটি শুধু মাত্র বিয়ের আয়োজন নয়, এই বিয়ের উদ্দেশ্যে হলো বৃক্ষরাজদের রক্ষা ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা। প্রকৃতির প্রতি প্রেম বা শ্রদ্ধা থেকেই যুগ যুগ থেকে এমন আয়োজন করেন সনাতনধর্মাবল্মী তথা হিন্দুরা।

আরবি/জেডআর

Link copied!