লক্ষ্মীপুরে ভুয়া পরিচয় দিয়ে জনতার হাতে গণধোলাই খেয়েছেন সিয়াম ও সৌরভ নামের দুই যুবক। অনৈতিক সুবিধা নিতে আল মাজেদ সিয়াম কখনো নিজেকে ছাত্র সমন্বয়েক পরিচয় দিতেন, আবার কখনো প্রশাসনের লোক হিসেবে পরিচয় দিও বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন। তবে এবার নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ান তিনি। তার সঙ্গী সৌরভ নামের যুবক নিজের পরিচয় দেন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল হিসেবে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের ওয়েলকাম চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পাশে গাড়ি পার্কিং করতে নিষেধ করলে রেস্টুরেন্টের পাশের ভবন মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান তারা দুজন। তখন নিজেদের ভুয়া পরিচয়ে প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। এসময় ভবন মালিকের ছেলে অধ্যাপক দিদার আহমেদ তাদেরকে খারাপ ব্যবহার না করতে নিষেধ করলে তারা তাকে কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনতা এগিয়ে আসে এবং দুই যুবকের যথাযথ পরিচয় জানতে চায়। ভুয়া পরিচয় পূনরায় দিলে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের গণধোলাই দেয়। এতে সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সিয়াম গুরুতর আহত হলেও সটকে পড়ে কর্ণেল পরিচয় দেওয়া সৌরভ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দেয়া আল মাজেদ সিয়াম এর আগেও ভুয়া সমন্বয় এবং প্রশাসনের লোক পরিচয়ে মিডিয়া ট্রায়ালে এসেছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত সিয়াম রায়পুর পৌরসভার বাসিন্দা।
অপরদিকে কর্ণেল পরিচয় দেওয়া সৌরভের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার একলাসপুরে। রায়পুরে নানার বাড়িতে থাকেন তিনি।
ভুক্তভোগী অধ্যাপক দিদার বলেন, সৌরভ ও সিয়ামের পরিচয় আমরা ঘটনার পর নিশ্চিত হয়েছি। আছরের পর গাড়ি পার্কিং নিয়ে বাকবিতন্ডায় সিয়াম নিজেকে মেট্রো টিভির সাংবাদিক এবং সৌরভ নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। তারা গালমন্দ করে মারধর করলে স্থানীয় জনতা সিয়ামকে গণধোলাই দেয়। এসময় সৌরভ ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও তিনজন পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
স্থানীয়রা জানায়, মেট্রো টিভির সাংবাদিক ও কর্ণেল পরিচয় দিয়ে দুই যুবক চড়াও হয়। ঘটনার পর তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেটে দুই প্রতারকের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে।
বিষয়টি জানার জন্য, সৌরভকে কল করা হলে তিনি বলেন আমরা এ ধরনের কোনো পরিচয় দেইনি। তারাই গাড়ির রাখার কারনে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে আল মাজেদ সিয়ামকে কল দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরই তিনি লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেনি।
ঘটনার সূত্র জানায়, তাকে জনতা সদর থানার এএসআই সবুজের জিম্মায় তুলে দেয়। পরে আহত অবস্থায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে সিয়াম।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমার থানা থেকে ফোর্স গিয়েছে। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :