বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষে বাম্পার ফলনের আশায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। যমুনা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলসহ এ উপজেলার যেদিকে দু`চোখ যায় সেদিকেই শুধু ভুট্টার আবাদ। ভুট্টা চাষে স্বল্প খরচ এবং অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষক আগাম মিষ্টি কুমড়া বা ধান কাটার পর জমিতে সবেমাত্র ভুট্টার বীজ বপণ শুরু করেছেন এবং কৃষকদের জমি বছর চুক্তিতে নিয়ে প্রকল্প আকারে বাণিজ্যিকভাবে হয়েছে ভুট্টার চাষ। পুরো চরজুরেই এখন কৃষকরা ভুট্টার জমিতে পানিসেচ, নিড়ানি এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের বুড়িপাড়া চরের কৃষক আব্দুল হান্নান মোল্লা বলেন, গত বছর তিনি ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছিলেন। বিষা প্রতি ২৫ হাজার টাকা করে লাভ হয়। এবছর ২৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন।
সদর ইউনিয়নের অন্তরপাড়া চরের কৃষক জামিল মিয়া বলেন, গত বছর ভুট্টা চাষ করে তিনি বেশ ভালো লাভ করেছেন। তাই এবছর তিনি ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। তাদের দেখাদেখি অনেকে শতবিঘা জমি পর্যন্ত একত্রে প্রকল্প আকারে ভুট্টার আবাদ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮ হাজার ৩০০ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে এবং চলমান রয়েছে। কৃষি অফিস আশা করছে, এবছর ৯ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হবে। ভুট্টার বীজ বপনের চার মাসের মধ্যেই সাধারণত ফলন পাওয়া যায়। সাধারণত চরাঞ্চলের জমিতে প্রতি হেক্টরে ১০ মেট্রিকটন বা বিঘায় ৩৫ থেকে ৫০ মণ করে ভুট্টার ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখন প্রতি মণ ভুট্টার বাজারদর ১৪শ` টাকা। তাই ভুট্টা আবাদ করে এখন কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, গত কয়েক বছরই কৃষকেরা ভুট্টার আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। তাই দিন দিন ভুট্টা সারিয়াকান্দিতে এ ফসলের আবাদ বাড়ছে। ভুট্টা চাষের জন্য ইতিমধ্যেই কৃষকদের মাঝে প্রয়োজনীয় আধুনিক কৃষিযন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।