শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম

কাপ্তাই হ্রদের মাছ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে

এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম

কাপ্তাই হ্রদের মাছ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন কাপ্তাই হ্রদ। ১৯৬০ সালে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের পর সৃষ্ট এই জলাশয় এখন শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের নয়,অর্থনৈতিক সম্ভাবনার এক বিশাল উৎসে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এই জলাধার। দেশীয় মৎস্য প্রজাতির এক বৈচিত্রময় ও সমৃদ্ধশালী জলভান্ডার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ।

কাপ্তাই হ্রদের মিঠা পানির মাছ দেশের গন্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। এতে সরকারি রাজস্ব আদায়ের পাশা-পাশি অর্জিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। ফলে স্থানীয়  অর্থনীতির সাথে সমৃদ্ধ হচ্ছে জাতীয় অর্থনীতিও। হ্রদের মোট মৎস্য উৎপাদনের ৯০শতাংশই দখল করে নিয়েছে কাঁচকি ও চাপিলা। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা কাঁচকি ও চাপিলা মাছ চাহিদা বাড়ায় এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে।

কাপ্তাই হ্রদের মাছ মিঠা পানির হওয়ায় এর প্রতি বৈশ্বিক চাহিদা উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে সীমার্ক,বিডিফুড,মাসুদ ফিশ,এবং আনরাজ ফ্যাক্টরি-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত প্রতিষ্ঠান হ্রদের স্থানীয় জেলে ও ব্যবসায়িদের কাছ থেকে সংগ্রহ করছে কাঁচকি ও চাপিলা জাতীয় মাছ। আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তারা এই মাছ রপ্তানি করছে আরব আমিরাত, লন্ডনসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিনিধি দলও কাপ্তাই হ্রদের কাঁচকি ও চাপিলা মাছ নিয়ে দেখিয়েছে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা এই মাছ তাদের দেশে আমদানির জন্য প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক সাড়াও দিয়েছেন। এখন শুধু চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই কাপ্তাই হ্রদকেন্দ্রিক ভাবে যোগ হবে অর্থনীতিতে নতুন আরেক মাত্রা।

কাপ্তাই হ্রদের ছোট মাছের আধিক্য ইতোমধ্যেই আশাজনকভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে হ্রদের মোট মৎস্য উৎপাদনের ৯০শতাংশই দখল করে নিয়েছে কাঁচকি ও চাপিলা। আর স্থানীয় জেলেরা এই মাছ সংগ্রহ করে নির্বাহ করছে তাদের জীবন-জীবিকা। তবে রপ্তানির ব্যবস্থা স্থানীয়ভাবে আরও উন্নত করা হলে,সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে রাঙামাটিতে প্রসেসিং ফ্যাক্টরি স্থাপন করা গেলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাশা-পাশি সরাসরি প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ যেমন উপকৃত হবে। একইভাবে আঞ্চলিক অর্থনীতিসহ জাতীয় অর্থনৈতিকে করবে আরও সমৃদ্ধশালী।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সঠিক রপ্তানি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদ শুধু দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে। একদিকে হ্রদের মাছ রপ্তানি যেমন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ সুগম করছে,তেমনি এটি স্থানীয় অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করছে। টেকসই পরিকল্পনা এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৎস্য খাতে কাপ্তাই হ্রদ হতে পারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের একটি মডেল, যা জাতীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে দেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলে প্রত্যাশা মৎস্য খাত সংশ্লিষ্ট সকলের।

বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপক আশরাফুল আলম ভুইয়া বলেন, হ্রদ থেকে ১৯ হাজার মেট্রিক টন কেচকি ও চাপিলা আহরণ করা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকার মত। দক্ষিণ কোরিয়া গর্ভামেন্ট কাপ্তাই হ্রদের কেচকি ও চাপিলা মাছ নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা গবেষণা করে দেখছে হ্রদের কেচকি ও চাপিলা তাদের দেশে চাহিদা রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিনিধি দল আরো বলেছেন,তারা এখানে একটি উন্নতমানের মর্ডান হ্যাচারি করবে। তবে ২-১ মাসের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া এই হ্রদের মাছ নেবে এধরনে সম্ভাবনা রয়েছে।তারা অনেকটুকু এগিয়ে। দক্ষিণ কোরিয়া প্রাথমিকভাবে কাপ্তাই হ্রদের কেচকি ও চাপিলা নিতে রাজি হয়েছে।

কাপ্তাই হ্রদে কেচকি ও চাপিলা মাছ ব্যবসায়ি মাহফুজ ও আব্দুল শুক্কুর বলেন, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের মিঠা পানির মাছ অত্যন্ত মজা ও সুস্বাদু। তাই কাপ্তাই হ্রদের কেচকি ও চাপিলার চাহিদা অনেক বেশি। দেশের মাটিতে যেমন কেচকি ও চাপিলার চাহিদা রয়েছে। বিদেশেও কাপ্তাই হ্রদের কেচকি ও চাপিলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ছোট মাছ কেচকি ও চাপিলা এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া এখানে এসে তাদের প্রতিনিধিরা সার্ভে করে গেছেন। খুব শিগগরই তারা কাপ্তাই হ্রদের ছোট কেচকি ও চাপিলা রপ্তানি করবেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!