ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
খোশনূর রুবাইয়াৎ

সরকার চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে আন্তরিক

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম

সরকার চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে আন্তরিক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আন্দোলনের পর আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো চার মাসের মজুরি দেওয়া হয়নি ন্যাশনাল টি কোম্পানির কয়েক হাজার চা শ্রমিককে।

এমতাবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। চা শ্রমিকদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে কিছু বেসরকারি সংস্থা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো) এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা ‘গ্লোবাল ফান্ড ফর চিলড্রেন (জিএফসি)’ এর সহযোগিতায় চা শ্রমিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, সরকার চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর বর্তমান সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত আন্তরিক এবং এ বিষয়ে তারা কাজ কনে যাচ্ছি। তিনি অচিরেই এ সমস্যা সমাধানের আশা ব্যক্ত করেন। 

তাছাড়া তিনি চা-শ্রমিকদের এই দুর্দিনে তাদের পাশে থাকার জন্য একডো এবং সহযোগী সংস্থা গ্লোবাল ফান্ড ফর চিলড্রেন (জিএফসি) কে ধন্যবাদ জানান।

সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ন্যাশনাল টি কোম্পানির দলদলি ও কেওয়াছড়া চা-বাগানের দুইশ দুস্থ চা শ্রমিক পরিবারকে এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়।

একডো কর্তৃক খাদ্য সহায়তা বাবদ প্রদত্ত প্রতিটি ব্যাগে ছিল; পনের কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি চানা ডাল, দুই লিটার তেল, তিন কেজি পেয়াজ এবং এক কেজি লবণ। তাছাড়া একডো প্রত্যেক খাদ্য সহায়তা গ্রহণকারী প্রত্যেক চা-শ্রমিককে তাদের যাতায়াত ভাতা বাবদ একশত টাকা করে প্রদান করে। এ খাদ্য সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনূর রুবাইয়াৎ।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে একডো’র নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর চা-বাগানের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সাধারন চা-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এবং মজুরী বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠী বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই একডো’র সহযোগী সংস্থা গ্লোবাল ফান্ড ফর চিলড্রেন (জিএফসি) এর সহযোগিতায় সিলেট সদর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি) এর মালিকানাধীন দলদলি এবং কেওয়াছড়া চা-বাগানের মোট দু’শ চা-শ্রমিক পরিবারকে অদ্য কিছু জরুরী খাদ্য সহায়তা প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী প্রদান এবং পূর্বের ন্যায় নিয়মিত মজুরী নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।

এ ছাড়া এ খাদ্য সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি কর্মী জাফর সাদেক শাকিল, সভাপতি সুবর্ণযাত্রা, সিলেট, সংস্কৃতি কর্মী হুমায়ুন কবির জুয়েল, স্থানীয় টুকের বাজার ইউনিয়নের সদস্য আবুল কাশেম প্রমূখ।

এ খাদ্য সহায়তা পাওয়ার পর দলদলি চা-বাগানের চা-শ্রমিক অনিতা দাশ বলেন, মজুরী বন্ধ থাকার পর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই সংকটে আছি। প্রায় সময় অর্ধাহারে দিন পাড় করতে হয়। একডো’র এই সহায়তা আমাদের এই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। দলদলি চা-বাগানের আরেক চা-শ্রমিক নিয়তি বাউরি বলেন, আমাদের চা-বাগানের প্রায় সব বাড়িতেই এখন রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে। কেননা আমরা প্রায় বিগত চারমাস ধরে কোনপ্রকার মজুরী পাচ্ছিনা। কিছুদিন পূর্বে কোম্পানীর পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহের মজুরী প্রদান করা হলেও এখন আবার বন্ধ রয়েছে। ত্রাণ হাতে পেয়ে কেওয়াছড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক স্বপ্না দাস খুশি হয়ে বলেন, একডো’র আজকের এই সহায়তার ফলে অনেকদিন পর পরিবারের সবাই মিলে আবার কিছুদিন হলেও পেট ভরে খেতে পারবো।

আরবি/জেডআর

Link copied!