ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

সরিষাবাড়ীতে জমিসংক্রান্ত বিরোধে একজনকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ২

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

সরিষাবাড়ীতে জমিসংক্রান্ত বিরোধে একজনকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ২

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আতাউর রহমান বিপুল (৫০) নামে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে কুপিয়ে হত্যা ও দুই জনকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার ১৭ জানুয়ারি সকালে উপজেলার পোগদিঘার ইউনিয়নের তারাকান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করেছে। আতাউর রহমান বিপুল তারাকান্দি এলাকার আনোয়ার হোসেন ওরফে কালু তালুকদারের ছেলে। এ ঘটনায় দুই নারীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন আতাউর রহমানের স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫) ও মা আছমা বেগম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন কালু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই তোতা মিয়ার সাথে বসতবাড়ীর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল শুক্রবার সকালে ওই জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পুণরায় আনোয়ারের ছেলে বিপুল ও আপেলের মা আনোয়ারা বেগম এর সাথে কথা কাটাকাটি বাদে। এর কিছুক্ষণ পর আপেল বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ডেকে এনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত ভাবে বিপুল ও স্ত্রী মুক্তা বেগমের উপর হামলা চালায়। এ সময় বিপুলের ডান হাত ও ডান পা কুপিয়ে আলাদা করে ফেলে এবং তার স্ত্রী মুক্তার ডান হাতের তিনটি আঙ্গুল ও বাম পায়ের রগ কেটে ফেলে। এই দেখে বিপুলের মা আছমা বেগম ফিরাতে গেলে তারও একটি হাত ভেঙে দেয় আপেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। তাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী দৌড়ে আসতে থাকলে প্রতিপক্ষ তোতা মিয়ার ছেলে আপেল মাহমুদসহ সন্ত্রাশীরা অস্ত্র উচিয়ে হৈচৈ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয়রা বিপুল, মুক্তা ও আছমা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রবিউল ইসলাম বিপুল মিয়াকে মৃত্যু ঘোষণা করে। 

আহত দুই নারীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৌরভ বাবু জানান, মারামারি চলাকালীন সময় আহতদের ডাক চিৎকারে আমি ঘটনাস্থলে এসে দেখি বিপুলের হাত ও পা দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়ে আছে এবং বিপুলের স্ত্রী মুক্তার হাতের আঙ্গুল ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। এ সময় তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় কেউ তাদের কাছে ভিড়তে পাচ্ছিল না। পরে আমি মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে মাইকিং করে লোকজনকে ডেকে আনি। লোকজনের আসা দেখে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন কালু অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জমিতে লাগানো গাছ জোর করে তোতা মিয়া ও তার ছেলে আপেল মাহমুদ কেটে ফেলে। বিষয়টি আমার ছেলে বিপুল তার স্ত্রী মুক্তা জানতে গেলে তাদের উপর রামদা দিয়ে কুপিয়ে ছেলেকে হত্যা করে এবং ছেলের মা ও ছেলের বউকেও কুপিয়ে আহত করে। এই ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবী করেন তিনি।

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ চাঁদ মিয়া বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে বিপুল ও আপেলদের মধ্যে বিরোধ ছিলো। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সকালে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আপেল ও তার লোকজন অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বিপুলের এক হাত ও এক পা বিচ্ছিন্ন করে এবং তার স্ত্রী মুক্তা ও তার মা আছমা বেগমকেও কুপিয়ে রগ কেটে দেয়। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে বিপুল মিয়া মারা যায়। বাকী দুইজন কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় হামলার সাথে জড়িত আনোয়ারা বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!