হাসপাতাল থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পালানো সেই আসামি গ্রেপ্তার

ছিনতাই করে পালানোর সময় বগুড়ার আদমদীঘিতে বিক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে আহত ছিনতাইকারী শাহাদত হোসেন কলম (৩০) পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে হাতকড়া পরা অবস্থায় পালানোর প্রায় ৩৩ ঘণ্টার ব্যবধানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর এলাকার লেহেন্দা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়েছিলেন আসামি শাহাদত হোসেন কলম।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে হাতকড়াসহ পালানো আসামি কলম নিয়ামতপুর লেহেন্দা গ্রামে তার স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ের (ভাগ্নি) শ্বশুরবাড়িতে
আত্মগোপনে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ ও আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মোস্তাফিজুর
রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নওগাঁর নিয়ামতপুর এলাকার লেহেন্দা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় হাতকড়াও উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে বগুড়া পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে
জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া ও ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার। তিনি জানান, এ ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোস্তফা মঞ্জুরকে প্রধান করে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি রাতে জয়পুরহাটের তিলকপুর বাজারের এক বিকাশ এজেন্টের টাকাসহ ব্যাগ ছিনতাই করে মোটরসাইকেল যোগে পালাচ্ছিলেন ছিনতাইকারী রাজু পালোয়ান ও শাহাদত হোসেন কলম নামের দুই জন। এ সময় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আমইল গ্রামের রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে শাহাদত হোসেন কলম এবং রাজু পালোয়ানকে আটক করে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এছাড়া তাদের অপর সহযোগী বাঁধনকেও জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর বাজার এলাকা থেকে জনতা আটক করে। 

একপর্যায়ে তিনজনকে পিটুনির পর রাজুর পায়ের রগ কর্তন করা হয়। পরে পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। তারা আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম চৌধুরী পাড়ার মোস্তাকিন পালোয়ানের ছেলে রাজু পালোয়ান (৩১) একই এলাকার আব্দুস সামাদ খোকা মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন কলম (৩০) ও চয়েন চৌকিদারের ছেলে বাঁধন (৩২)। এদের মধ্যে রাজু পালোয়ান ও শাহাদাত হোসেন কলমকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও বাঁধনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সকালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় ভুক্তভোগী বিকাশ এজেন্ট তিলকপুর হাই স্কুল পাড়ার ইমরান হোসেন বাদি হয়ে ওই তিনজনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। পলাতক আসামি শাহাদত হোসেন কলমের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মোস্তাফিজুর রহমান।