রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বেতছড়ি এলাকায় ইছামতী নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে উত্তোলন করা মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় পাচার করছে স্থানীয় একটি চক্র। সড়কের পাশ ঘেঁষে গভীর গর্ত করে আধুনিক এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খুঁড়ার ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে কাউখালী-রাঙামাটি সংযোগ সড়ক। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বগাবিলি ব্রিজের ৫০০ মিটার দুরে বেতছড়ি এলাকায় নদীর পাড় কাটার এই মহাযজ্ঞ চলছে। সড়কের পাশে বালুর স্তূপ এবং মাটি বহনের জন্য গাড়ি যাতায়াতের রাস্তা বানানো হয়েছে। সেখান থেকে নদীর দিকে নজর দিলেই দেখা যায় বিশাল এলাকাজুড়ে এক্সকেভেটরের সাহায্যে নদীর পাড় কাটার গভীর চিহ্ন। সেখানে বিশাল কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পাড়েই এক্সকেভেটর রাখা হয়েছে। এসব মাটি আশেপাশের ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। একটি চক্র বেশ কিছুদিন ধরে এই মাটিগুলো কেটে ট্রাকে করে প্রকাশ্যে পাচার করছে। এতে খালের পাড়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। মাটি কাটতে কাটতে একেবারে সড়কের পাশে চলে এসেছে। চক্রটি এক্সকাভেটর দিয়ে এমন গভীরভাবে গর্ত করে মাটি কাটাছে পাশের ক্ষেতের জমি ভেঙে পড়ছে খাদের মধ্যে। তবে মাটি খেকো চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কেউ বাধা দিতেও সাহস পাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষক কয়েকজন জানান, একটি প্রভাবশালী মহল ইতোপূর্বে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করতো। এবার এর সাথে নদীর পাড়ের মাটিও কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। উপজেলার একেবারে শেষ সীমান্ত হওয়ায় এই স্থানে প্রশাসনের তদারকির অভাবে দিনের পর দিন এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। শুধু এই স্থানেই নয়, ইছামতী নদীর আরও বিভিন্ন পয়েন্টে একইভাবে বালু উত্তোলন করে এবং পাড়ের মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
নদীর আশেপাশে স্থানীয় বসবাসকারীরা জানান, সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ। চলে ভোররাত পর্যন্ত। এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ১০-১২টি ট্রাক গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে এসক্সকেভেটর ও মাটিবাহী ট্রাকের বিকট শব্দে নির্ঘুম রাত কাটতে হচ্ছে তাদের। প্রতিবাদ করতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, নদী থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। ইছামতী পাড়ের মাটি কাটার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :