ফেল করে রাজশাহী নার্সিং কলেজের ১৪ শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের অপসরণ দাবি করেছেন। শুধু অপসরণই নয়, কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে তারা বিক্ষোভ করেছেন। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নার্সিং কলেজের এসব শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন কলেজ চত্তরে। একই সময় ক্লাশ চালু রাখা, কলেজের মধ্যে বিক্ষোভ করে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাল্টা বিক্ষোভ করেছে।
দু’পক্ষের বিক্ষোভে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও রাজপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ৩য় বর্ষের বিএসসি ইন নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষা গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ জানুয়ারী এ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এ পরীক্ষায় রাজশাহী নার্সিং কলেজ থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থী কমিউনিটি হেলথ্ বিষয়ে ফেল করে। ফেল করার বিষয়টি ১৪জন শিক্ষার্থী জানতে পেরে ১৬ জানুয়ারি কলেজের অধ্যক্ষের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই সাথে তারা অধ্যক্ষের নামের আগে আওয়ামী লীগের ট্যাগ জুড়ে দিয়ে তার অপসরণ দাবি করে আল্টিমেটাম দেন।
প্রেক্ষিতে রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ফেল করা ১৪ জন শিক্ষর্থী কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের হাত করে আন্দোলন করার চেষ্টা করে। কিন্তু ফেল করা শিক্ষার্থীদের সাথে সাধারণ কোনো শিক্ষার্থী যোগ না দেয়ায় ১৪জন শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করে। তারা অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমানের অপসরণ দাবি করে বিক্ষোভ করে।
এদিকে ১৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করার প্রতিবাদে কলেজের অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ক্লাস চালু রাখা ও অধ্যক্ষের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে ১৪জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হন। এমন কি মারমুখি আচরণ করেন তারা। এতে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরেররাজপাড়া থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ ও রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ ফেল করা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও তাদের কথা শোনেন। তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন পরিচালক। পরে বিক্ষোভ কারী শিক্ষার্থীরা নার্সিং কলেজ ছেড়ে চলে যায়।
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমান বলেন, যারা ফেল করার পরের দিনই আমার কক্ষে তালা দিয়েছে। আমি তাদের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছি কিন্তু তারা আমার সাথে বসেনি। আমার সাথে তাদের বসা উচিৎ ছিল। তা না করে আমার কক্ষে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃংখলা করার বিক্ষোভ করার মত কোনো কিছু নেই। কারণ আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ফেল করা শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে। ফেল করা শিক্ষার্থীরা কলেজে যে কান্ড ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আপনার মতামত লিখুন :