ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

সরিষা খেতে মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন চাষিরা

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম

সরিষা খেতে মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন চাষিরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের লালুকা গ্রামে সরিষার জমিতে সরিষার ফুল হইতে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলি জমিতে সরিষার ফলন লাগিয়ে সরিষার গাছে হলুদ ফুল ফুঁটলে মধু সংগ্রহকারীরা মৌমাছির কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য ব্যস্ততার সময় পার করেন। মধু সংগ্রহকারী রহিম জানান,মধু সংগ্রহকারী যেমন আর্থিকভাবে তারা যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি মধু বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মধু সংগ্রহকারীরা মধু বিক্রি করে যেমন আয় করছেন পাশাপাশি মধু চাষ করায় ওই জমিতে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মধু সংগ্রহকারী সাইফুলের সঙ্গে কথা বলে জানায়, একটি রানি মৌমাছির বিপরীতে প্রায় তিন থেকে চার হাজারের মতো পুরুষ মৌমাছি থাকে একেকটি বাক্সে। বাক্সগুলো মৌমাছিতে ভরে গেলে সরিষাক্ষেতের আশপাশের স্থানে সারিবদ্ধভাবে রেখে দেওয়া হয়। এরপর সেসব বাক্স থেকে সরিষা ক্ষেতের ফুলে ফুলে ভোঁ-ভোঁ শব্দ তুলে ঘুরতে থাকে প্রশিক্ষিত মৌমাছিরা। এভাবে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে চলে আসে বাক্সে।

প্রতিদিন সকাল ৭টা হইতে সন্ধ্যা পর্যন্ত মধু সংগ্রহকারীরা মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এসব মধু স্থানীয়ভাবে বোতলজাত করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে তাদের পরিবারের জীবিকা চলে। উপজেলা সদরের চৌমুহনী বাজার এলাকায় সরিষার জমিতে মধু সংগ্রহকারী এন্তাজ জানায়, আমরা সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে বছরে ৪ মাস কাজ করে থাকি। বাকি ৮ মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পুষিয়ে রাখতে হয়। ডিসেম্বর মাস হইতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন মৌমাছির বাক্স থেকে ৭ থেকে ৮ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়। আমি এই সরিষার ক্ষেতের পাশে ১২টি বাক্স ফেলে রেখেছি। প্রতি কেজি মধু বিক্রি করি ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত।

সরিষা ক্ষেত থেকে মধু কিনতে আসা বেলোহালী স্কুলের শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম জানান, আমাদের এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরিষার ক্ষেতের সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। খাঁটি মধু কিনতে আমি সরাসরি সেই সরিষার জমিতে আসি। আসল মধুর যে স্বাদ তা আমি সরিষার ফুল থেকে মৌমাছির খাঁটি মধু কিনে বাড়িতে এনে মুড়ি দিয়ে খেয়ে খুব তৃপ্তি পেয়েছি।

দুপচাঁচিয়া কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষি জমিতে এবার সরিষার ফলন বেড়েছে। এবার দুপচাঁচিয়া ২টি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নে সরিষা বিঘা পতি ৫ থেকে ৬ মণ ফলন হয়েছে।

চলতি রবি শস্য মৌসুমে এ উপজেলায় জমিতে মধু সংগ্রহকারী এন্তাজ জানায়, আমরা সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে বছরে ৪ মাস কাজ করে থাকি। বাকি আট মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পুষিয়ে রাখতে হয়। ডিসেম্বর মাস হইতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন মৌমাছির বাক্স থেকে ৭ থেকে ৮ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়। আমি এই সরিষার ক্ষেতের পাশে দশটি বাক্স ফেলে রেখেছি।প্রতি কেজি মধু বিক্রি করি ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু কিনতে আসা বেলোহালী স্কুলের শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম জানান,আমাদের এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরিষার ক্ষেতের সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। খাঁটি মধু কিনতে আমি সরাসরি সেই সরিষার জমিতে আসি। আসল মধুর যে স্বাদ তা আমি সরিষার ফুল থেকে মৌমাছির খাঁটি মধু কিনে বাড়িতে এনে মুড়ি দিয়ে খেয়ে খুব তৃপ্তি পেয়েছি।

দুপচাঁচিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষি জমিতে এবার সরিষার ফলন বেড়েছে। এবার দুপচাঁচিয়া ২টি পৌরসভা সহ ৬টি ইউনিয়নে সরিষা বিঘা পতি ৫থেকে ৬মণ ফলন হয়েছে। চলতি রবি শস্য মৌসুমে এ উপজেলায় ৩ হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ শুরু কয়েছে। গত বছর ৪ হাজার ২শ‍‍` ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছিল। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা সরিষার চাষিদের কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। 

তিনি আরো বলেন, সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন ১০ গুন বেড়ে যায়। এতে সরিষার ফলন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সরিষার ক্ষেত থেকে বিনা খরচে মধু সংগ্রহ করা একটা লাভজনক ব্যবসা। এর ফলে একদিকে মৌ চাষিরা মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে সরিষার খেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বাড়ছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!