ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, প্রতারণা ও ভুয়া মামলার ভয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে খায়রুল ইমাম সেকুল ও কামরুজ্জামান খাদেম দানু নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত খাইরুল ইমাম সেকুল সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামের মৃত আলী ইমামের ছেলে এবং কামরুজ্জামান খাদেম দানু সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর পূর্ব পাড়ার মৃত সমসু মিয়ার ছেলে। তারা পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচারী দোসর একথা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ছাত্রীদের মধ্যে ভুক্তভোগী ১০ জন ছাত্রী সেকুল ও দানুর বিচার চেয়ে গত ২০ অক্টোবর ২০২৪ চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীরা জানান, ইন্টারন্যাশনাল ল্যাংগুয়েজ টিচিং একাডেমিতে ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য জন্য প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৫টায় প্রতিষ্ঠানে আসতাম। স্যার আসার আগমুহূর্তে ও ছুটির পর যাওয়ার পথে সেকুল এবং দানু ক্লাস শুরুর আগে ও পরে তাদের গায়ে হাত দিত, বেড টাচ করতো, বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতো, কুপ্রস্তাব দিতো। ভয় দেখাতো আওয়ামী লীগ সরকারের অনেকের সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক আছে কারো কাছে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলে ডিআইজি, এসপি ও মন্ত্রীর তাদের কাছে কিছুই হবে না তাদের। কিছুদিন ক্লাস করার পর ভয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা আর ক্লাস করতে আসে নাই। গত ০৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিমুল স্যারকে বিষয়টা বললে দানু ও সেকুলকে শিমুল সাহেব ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলে উল্টো তারা শিক্ষক শিমুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়।
জানা যায়, শিক্ষক ওয়াসিম আহমেদ শিমুল খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত তার অফিস সময়ের আগে ও পরে গত ২০১০ সাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল ল্যাংগুয়েজ টিচিং একাডেমিতে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে ইংরেজি ভাষা সহ একাডেমিক গ্রামার শিক্ষা দিয়ে আসছেন। গত ২০১৮ সালে খাইরুল ইসলাম সেকুল ও তার মামাত ভাই কামরুজ্জামান দানু ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য আসে। এত কিছু ঘটেছে আমার ছাত্রীরা আমাকে কখনো জানায়নি। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর ছাত্রীরা তাদের অভিভাবকদের নিয়ে এসে আমাকে উপরোক্ত বিষয়গুলো জানান। সেকুল ও দানুকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় ইউএনও অফিসে যা তদন্ত শেষে মিথ্যা অভিযোগ প্রমানিত হয়।পরে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সেকুল ও দানু তাদের আত্বীয় সরকারি বড় কর্মকর্তা বলে জেলার অনেক সাধারন মানুষদের ঝামেলা মিটিয়ে দিবেন বলে হাতিয়ে নিত অর্থ। মামলা বানিজ্যেও সাধারণ মানুষ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
অভিযুক্ত খাইরুল ইমাম সেকুল তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং কামরুজ্জামান খাদেম দানুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
ছাত্রীদের যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দীন জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :