দুই পক্ষের পরিবারের লোকজন আলোচনা করে দেনমোহরের ১৫ লাখ টাকা ও তিন মাসের খরচ বাবদ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করার পর আলোচনা সাপেক্ষে ৯০ হাজার টাকা সর্বমোট ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকায় খোলা তালাক হওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সেই কলেজছাত্রী রিয়া আকতার ও এএসআই জাহাঙ্গীর আলম এর মধ্যে। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষ থেকে তার পরিবারের লোকজন রিয়া আক্তারকে ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর রিয়া আক্তার তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন। আলোচনা হয়েছিলো রিয়া আক্তার চলে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম এসে স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি বিষয়টি মিমাংসা হলেও আজ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর আলম তালাক রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করেননি এবং কাজির ফি`র টাকাও পরিশোধ করেননি।
এই ঘটনায় গত ২৫ ডিসেম্বর দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ‘স্ত্রী-সন্তান থাকতেও কলেজ ছাত্রীকে ২য় বিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার’ এবং ২৬ ডিসেম্বর দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনে ‘স্ত্রী-সন্তান থাকতেও প্রতারণা করে কলেজছাত্রীকে বিয়ে’ শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো।
গত ৯ জানুয়ারি টাঙ্গাইল আদালত প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিনের চেম্বারে কাজী শাহীন এর মাধ্যমে খোলা তালাক রেজিস্ট্রার হয়। এসময় পুলিশের এএসআই জাহাঙ্গীর আলম এর পক্ষে একজন অ্যাডভোকেট ও তার পরিবারের লোকজন এবং রিয়া আকতারের পক্ষে তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
কলেজছাত্রী রিয়া আক্তার টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের রাজা খানের মেয়ে ও করটিয়া সাদত কলেজের ছাত্রী। এএসআই জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বলদিঘাট এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি নাগরপুর থানা থেকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বদলি হয়ে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানায় যোগদান করেছেন।
কলেজ ছাত্রী রিয়া আক্তার বলেন, যেহেতু সে আমার সাথে সংসার করবে না। তাই আর ঝামেলা বাড়াইনি। কাবিন নামার ১৫ লাখ এবং তিনমাসের খরচ বাবদ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে খোলা তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করি এবং বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা উঠিয়েও নিয়েছি। আমি চলে আসার পর জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষর করার কথা ছিলো, স্বাক্ষর করছে কিনা আমি জানি না।
এএসআই জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষ থেকে আসা এরশাদ বলেন, মেয়েটা আগে টাকা হাতে নেয়ার পর তালাকনামাসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। রিয়া আক্তারের পরিবার থেকে এবিষয়ে কথা বলতে কেউ রাজি হয়নি।
কাজী শাহিন বলেন, দেনমোহরের ১৫ লাখ টাকা ও তিন মাসের খরচ বাবদ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর রিয়া আক্তার তালাক রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করেন। রিয়া আক্তার চলে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম এসে স্বাক্ষর করবেন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই পরিবারের লোকজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত জাহাঙ্গীর আলম এসে স্বাক্ষর করেননি, ফলে তালাক অসম্পূর্ণ রয়েছে এবং আমার ফি` পরিশোধ করেননি। মোবাইলে যোগাযোগ করার পর জাহাঙ্গীর আলম আগামী ২৮ তারিখে নাকি মামলার শুনানি আছে, সেদিন এসে স্বাক্ষর করতে চেয়েছেন। আমার ফি`ও দিতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পুলিশের এএসআই জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :