সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে উপজেলা পরিষদে পুরোনো জরাজীর্ণ ৪টি ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ কার্যালয়ের কার্যক্রম। ভবনগুলো এখনই পরিত্যাক্ত ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন অবস্থানরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় প্রতিদিনই খুলে পড়ছে ছাদের পলেস্তরা। বর্ষা মৌসুমে ছাদ চুঁইয়ে পড়ে পানি। এতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও জরুরি নথিপত্র নষ্ট হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভবন ভেঙে পড়ার ভয় ও আতংক নিয়েই সেবা দিচ্ছেন উপজেলার ১০টি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জরাজীর্ণ ৪ টি ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করা সমাজ সেবা কর্মকর্তার কার্যালয়, সিনিয়র উপজেলা মৎস কর্মকর্তার কার্যালয়, সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়,পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, সেটেলমেন্ট অফিস ও সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়টি ভেঙে নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
ঝুঁকিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা ঐ ৩ ভবনের ৯ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫০-৬০ বছর আগে (পাকিস্তান আমলে) এই ভবনগুলো উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণ করা হয়। কার্যালয়গুলোতে নানা ধরনের সেবা নিতে লোকজন আসেন। প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক সাধারণ মানুষেরা সেবা নিতে আসা-যাওয়া করেন এখানে।
জরাজীর্ণ ভবগুলোর ছাদের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তোরা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। সেই রডগুলোতে জং ধরেছে। কর্মচারীরা আতংকের মধ্যেই দাপ্তরিক কাজ করছেন। সেবা নিতে আসা ব্যাক্তিরা বার বার তাকিয়ে থাকেন ছাদের দিকে। কখনো মাথার ওপর আবার কখনো আসবাবাপত্রের ওপর ছাদের পলেস্তোরা খসে পড়ছে। ভেতরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ বিরাজমান। ভবনটির দরজা জানালা ভেঙে গেছে অনেক আগেই।
সমাজসেবা কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আব্দুল লতিফ বলেন, প্রায়ই আমাকে এই অফিসে আসতে হয়। ভবনের প্লাস্টারগুলো খসে পড়ছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আতংক নিয়েই কাজ সারতে হয়। দ্রুত জরাজীর্ণ ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা দরকার।
উপজেলা সোনালী ব্যাংক পিলসির এক কর্মচারী বলেন, বর্তমানে ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। ছাদের বেশিরভাগ জায়গার পলেস্তোরা খুলে রড বের হয়েছে। প্রায় সময়ই মাথার ওপর পলেস্তোরা খসে পড়ে। দেওয়ালের পোলেস্তোরাও খসে পড়ছে। সবসময়ই আমাদের আতংকের মধ্যে থেকে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রুত জরাজীর্ণ ভবনটি ভেঙে একটি আধুনিক নতুন ভবন নির্মান করা প্রয়োজন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের আরেক কর্মচারী জানান, জরাজীর্ণ ভবনেই তাদের এসব কার্যক্রম করতে হচ্ছে। পুরো ভবনটিই স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। তাছাড়া অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রাখার কোন ব্যাবস্থা নেই। কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। দরজা জানালা ভেঙে পড়ছে। ভবনটি পুরনো হওয়ায় কোন সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই ভবনগুলোর বিষয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :