`গণঅভ্যুত্থানের ফলে ও তার জন্য ফ্যাসিজম দূর হওয়ায় আমি আমার মায়ের কোলে ফিরে এসেছি। জেলের ভিতর ছিলাম বলে যে আমরা অভ্যুত্থান করিনি তা না। আমরা জেলের ভিতরে নামাজ পড়ে সব সময় দোয়া করতাম। ফ্যাসিজম থেকে মুক্তির জন্য। আমি গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ তাদেরকে জান্নাত দান করুক।,
১৬ বছর পর জেল থেকে বাড়ি ফেরার পর এই কথা গুলো বলছিলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলায় জামিন পাওয়া ঠাকুরগাঁওয়ের মোতাহার হোসেন মানিক। তিনি সদর উপজেলার কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামের মৃত. আবুল হোসেন মেম্বারের ছেলে। চাকরির ৬ মাস বয়সে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় ১৬ বছর জেল খাটেন তিনি।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৩৬ জন সাবেক বিডিআর জাওয়ান গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাদের কারামুক্তিতে স্বজনদের চোখে আনন্দের অশ্রু ঝরছে। আনন্দ বাঁধ ভেঙেছে তাদের মনে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে দীর্ঘ ১৬ বছর নিজ বাড়ীতে মায়ের কোলে ফিরলে তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় জমান আত্নীয় স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধু বান্ধবরা। এ সময় আবেগে-আপ্লুত হন উপস্থিত সকলে। আনন্দ বাঁধ ভেঙে যায় সকলের মনে। এর আগে বৃহস্পতিবার পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় মুক্তিপান মোতাহার হোসেন মানিক।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া মোতাহার হোসেন বলেন, সম্পূর্ণ বিনা বিচারে আমি ১৬ বছর কারাগারে ছিলাম। যদি সঠিক বিচার হতো তাহলে আমার কারাভোগ করতে হতো না।
কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ১৬ বছর পরে মায়ের কোলে ফেরা এটা অন্যরকম একটা অনুভুতি। এটা বলে বুঝানো যাবে না। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। মাত্র ৬ মাস চাকরির বয়সে বিনা অপরাধে ১৬ বছর জেল খানায় কেটে গেছে। কী থেকে কী হয়েছে এটা সকলে জানে।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক অসহায় ভাই এখনো ভেতরে রয়েছে। তাদের কোন অপরাধ নেই। তাদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এই সরকারের উচিত তাদের ছেড়ে দেওয়া।
আগামী ১০ তারিখের শঙ্কা করে তিনি আরও বলেন, `এখনো ১০ তারিখের শঙ্কায় আছি। কারণ ১০ তারিখে আবার কোর্টে যেতে হবে। এভাবে আরও কতোদিন কোর্টে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। পরে আবার কি হবে তারো কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমাদের প্রহসনের উপরে এই মামলা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছা করলে কিন্তু এই মামলা বর্তমান সরকার বাতিল করে দিতে পারেন। মামলা বহাল রাখলে আমাদের জন্য আরও কষ্টকর হবে। দূরদূরান্ত থেকে যাতায়াত করতে। পরে যদি আবার এই মামলায় কোনোকিছু হয়। তাই সরকারের উচিত মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেওয়া বলে মনে করছেন সাবেক এই বিডিআর সদস্য।`
আপনার মতামত লিখুন :