ঢাকা সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫

নওগাঁয় প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা

খোরশেদ আলম রাজু , নওগাঁ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

নওগাঁয় প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহরে ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলার নামে ও যাত্রাপালার নামে রাতভর নগ্ন নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। চলতি মাসের ২১তারিখ থেকে যাত্রা মঞ্চ নামের আড়ালে এই নগ্ন নৃত্য চলছে। আর তা দেখতে ভিড় জমাচ্ছে তরুণ-যুবক-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন, নৃত্যের নামে এমন অশ্লীলতা চলতে থাকলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চলতি মাসের ২১ তারিখ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এবার এ মেলার মাঠ ১কোটি ২লক্ষ টাকা দিয়ে চুক্তিতে ইজারা নেওয়া হয়েছে। যা বড় বড় মেলাতেও এতো টাকার ইজারা হয়নি। মূলত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ মেলায় সার্কাস ও যাত্রা পালার নামে এমন ভ্যারাইটি শো করার জন্যই এতো টাকার ডাক হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

গ্রামীণ যাত্রাপালা নামে বৃহস্পতিবার (২৩জানুয়ারি) থেকে এখানে চলছে নগ্ন নৃত্য পরিবেশনা। রাত ১১টার পর শুরু হয়ে ভোর অবধি চলে চলে এই নগ্নতা। জনপ্রতি ২০০ থেকে ৮০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে নানা বয়সী মানুষ এই অশ্লীলতা দেখতে ভিড় করছে।

যাত্রা মঞ্চের পার্শ্ববর্তী ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার স্বাধীন কমার বলেন, ‘জীবনে যাত্রাপালা দেখেছি অনেকবার। কিন্তু এমন নগ্ন নৃত্য কখনও দেখিনি। এই অশ্লীলতা বন্ধ না হলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে। প্রশাসন কিভাবে এমন একটা আয়োজনের অনুমতি দিলো বুঝতে পারলাম না।’

আতোয়ার রহমান নামে স্থানীয় আরেক ব্যক্তি বলেন, রাতভর চলছে গানের তালে তালে নগ্ন নাচ। আর এই আয়োজনে বিশেষ করে তরুণ-যুবকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। এসব বন্ধ করা দরকার। যারা এর আয়োজন করেছে তারা প্রভাবশালী। সে কারণে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। প্রশাসনই বা সব জেনেশুনে নীরব কেন সেটাও একটা প্রশ্ন।’

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন এ মেলার সাধারণ সম্পাদক। তার নিজ দপ্তরেই চলে মেলা ও যাত্রাপালার সকল কার্যক্রমের দিক- নির্দেশনা। তার সাথে মো.ইমরানসহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে মেলার দায়িত্বে। আর প্রতি রাতে এই আয়োজন থেকে পরিমাণ টাকা আসে তা তিনি বাটোয়ারা নিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেলার সাধারণ সম্পাদক ও গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক নূরল আমিন এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মোবাইলে নাম্বারে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।

নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল নৃত্যে হচ্ছে। আমরা পুলিশের পক্ষ সেটা ধারন করে যারা মেলার অনুমতি দিয়েছে তাদেরকে অবগত করেছি। নির্দেশনা পেলেই বন্ধ করে দেয়া হবে।

নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে মেলার নামে বা যাত্রাপালার নামে যেন কোন অশ্লীলতা না হয়। আপনার কাছে ছবি বা ফুটেজ থাকলে আমাকে দেন আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আর শিক্ষা প্রতিষ্টানে বসে মেলার কার্যক্রম পরিচালনা বে-আইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!