নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহরে ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলা ও যাত্রাপালার নামে রাতভর নগ্ন নৃত্য পরিবেশন চলছিল। চলতি মাসের ২১ তারিখ থেকে যাত্রা মঞ্চ নামের আড়ালে এই নগ্ন নৃত্য চলছে। আর তা দেখতে ভিড় জমাচ্ছে তরুণ-যুবক-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। নৃত্যের নামে এমন অশ্লীলতা চলতে থাকলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে স্থানীয় সচেতন মহল এর বিরোধিতা করে যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা বন্ধের জন্য প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে-চড়ে বসে প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন,উপজেলা প্রশাসন,সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে যাত্রাপালা বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চলতি মাসের ২১ তারিখ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলার আয়োজন করা হয়। এবার এ মেলার মাঠ ১কোটি ২লক্ষ টাকা দিয়ে চুক্তিতে ইজারা নেওয়া হয়েছে। মূলত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ মেলায় সার্কাস ও যাত্রা পালার নামে এমন ভ্যারাইটি শো করার জন্যই এতো টাকার ইজারা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
গ্রামীণ যাত্রাপালা নামে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে এখানে চলছে নগ্ন নৃত্য পরিবেশন চলে আসছিল। রাত ১১টার পর শুরু হয়ে ভোর অবধি চলে চলে এই নগ্নতা। জনপ্রতি ৪০০টাকা থেকে ২০০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে নানা বয়সী মানুষ এই অশ্লীলতা দেখতে ভিড় করে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন এ মেলার সাধারণ সম্পাদক। তার নিজ দপ্তর থেকেই মেলা ও যাত্রাপালার সকল কার্যক্রমের দিক- নির্দেশনা দিতেন। তার সাথে মো.ইমরানসহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে মেলার দায়িত্বে। আর প্রতি রাতে এই আয়োজন থেকে পরিমাণ টাকা আসে তা তারা বাটোয়ারা নিচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, গুজিশহরে ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার নামে রাতভর নগ্ন নৃত্য পরিবেশন চলছিল বলে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এসেছি। অশ্লীলতার বেশ কিছু প্রমাণও আমরা পেয়েছি। যার কারনে যাত্রাপালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে মেলা কমিটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়েছে। আগামীতে যেন এমন অশ্লীলতা না চলে সেদিকে নজরদারি থাকবে। তবে মেলা চলবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত।
আপনার মতামত লিখুন :