নিজ উপজেলা, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য জালিয়াতি করে চাকরি নিয়েছেন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে আইন অমান্য করে চাকরি করছেন তিনি। এ কারণে মতলব উত্তর উপজেলার বাসিন্দা চাকরি প্রার্থী সরকারি চাকরির আওতায় আসতে পারেননি।
জানা গেছে, গত ২০০৩ সালে শিক্ষক নজরুল ইসলাম চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন নজরুল ইসলাম। এরকিছু দিন পরেই তিনি চাকরি হতে অব্যাহতি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। ওই সময় তিনি তার নিজ উপজেলাসহ পুরো ঠিকানা গোপন করেন। মতলব উত্তর উপজেলা, গ্রাম দক্ষিণ রামপুর দেখিয়েছেন। অথচ তার আসল ঠিকানা হল চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলাে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বোলিয়ারচর গ্রাম। এই আসল ঠিকানাটি ব্যবহার করেছেন এখলাছপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরী নেওয়ার সময়।
জানা গেছে, প্রাথমিকে চাকরি নেওয়ার ঠিকানা জালিয়াতি না করলে মতলব উত্তর উপজেলার কোটায় চাকরি হতো না। মুলত এজন্যই তিনি নিজ তথ্য গোপন করেন। আর কারণে মতলব উত্তর উপজেলার একজন বেকার যুবক এই পদ থেকে বাদ পড়েন।
তথ্য গোপন ও জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি নেওয়ার পর নজরুল ইসলাম প্রথমেই যোগদান করে মুদাফর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় সভাপতির স্বাক্ষর জালজালিয়াতি করে স্কুলের টাকা লুটপাট করেছেন। এরপর ডিপার্টমেন্টাল ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কতৃপক্ষ। বর্তমানে তিনি পাচআনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাকে পালিশমেন্ট বদলী করেন। সেই থেকে তিনি এই স্কুলেই কর্মরত আছেন। এখানেও বেশ অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জেনেও চুপ রয়েছেন।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার আসল বাড়ি নদী ভাঙনের কারণে আমি চাকরিতে মতলব উত্তর উপজেলার ঠিকানা দিয়েছি। পুলিশ ভেরিফিকেশন করে আমার পক্ষে রিপোর্ট দিয়েছে। আপনার কাছে ডিসি কর্তৃক নদী ভাঙনের কোন সার্টিফিকেট আছে? এ প্রশ্নের সাথে সাথেই তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
স্থানীয় সুত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বিয়ে করেছেন লুধুয়া গ্রামে। বিয়ের সময় কাবিননামায় তার ঠিকানা দিয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলাের বোলিয়ারচর গ্রামের ঠিকানা। এখলাছপুর হাইস্কুলে চাকরি নেওয়ার সময়ও ঠিকানা দিয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার। শুধুমাত্র প্রাথমিকে চাকরি নেওয়ার সময় কোটা খালি পেয়ে ঠিকানা জালিয়াতি করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে মতলব উত্তর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। যেহেতু নিয়োগ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন।
চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াছমিন বলেন, ঠিকানা জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :