চাঁদপুরের মতলব উত্তরে কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি মেঘনা নদীর তলদেশ ছড়িয়ে পড়ায় দেশিয় জাতের মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে নদীর তীর এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার দশানী, ষাটনল, জেলেপাড়া, বাবু বাজার, এলাকায় মেঘনা নদীতে মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়। ওই এলাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলেন, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি মেঘনা নদীর তলদেশ দিয়ে নদীর নিম্নাঞ্চলে আসছে। সেখানে নদীর পরিবেশ দূষিত হয়ে দেশিয় ছোট-বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে। পচা মাছের দুর্গন্ধে নদী পাড়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় দশানী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইমদাদুল হক বলেন, গত শক্রবার সকালে নদী এলাকায় কিছু দেশীয় প্রজাতির মাছ মরে পাড়ে ভেসে উঠে। তবে ওই দিনের পর আর মাছ ভেসে উঠেনি। গত বছরও এই সময়ে এইরকম মাছ মরার ঘটনা ঘটে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ রূপালী বাংলাদেশকে জানায়, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার নদীর পানি এখানে প্রবেশ করেছে। শহরের বিভিন্ন কারখানার দূষিত বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এক সপ্তাহ ধরে নদীর পানির রং বদলে যাচ্ছে। দূষিত পানির কারণে পানির পিএইচ ও অ্যামোনিয়া মাত্রার চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়ায় নদীতে থাকা বিভিন্ন জাতের বড় মাছ, মাছের পোনা ও জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। মাছগুলো মরে ভেসে গেছে এবং নদীর পাড়ে জমাট হয়ে পচে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
মতলব উত্তর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, মাছ মারা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে। বর্জ্যের কারণে নদীর পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় মাছ মরে ভেসে ওঠে। পানিতে মিশে থাকা দূষিত পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
এর আগেও গেল বছর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকায় পানিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় এবং অক্সিজেন কমে যাওয়া মাছ মরে ভেসে উঠে। তবে এই বিষয় নিয়ে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানাগেছে।
আপনার মতামত লিখুন :