ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

চিরকুটে চোরের নম্বর, এক রাতে ছয় মিটার চুরি

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম

চিরকুটে চোরের নম্বর, এক রাতে ছয় মিটার চুরি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় এক রাতে ৫টি গভীর নলকূপ ও একটি কারখানার বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মাঠে একযোগে ওই মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা চুরি যাওয়া প্রত্যেক মিটারের বক্সের মধ্য একটি চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে গেছে। এসব চিরকুটে আবার সিরিয়াল নম্বরও লিখা রয়েছে।

গভীর নলকূপের মালিক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় গভীর নলকূপের মিটার গণহারে চুরি হচ্ছে। চুরি যাওয়ার ভয়ে মিটার গুলো লোহার খাঁচায় রাখা হলেও চোরেরা ওই মিটার বক্সের তালা ও মিটার বক্স কেটে মিটার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব বক্সের মধ্য চিরকুটে মোবাইল নাম্বার লিখে রাখা হচ্ছে। নলকূপের মালিকেরা ওই নম্বররে টাকা পাঠালে মিলছে মিটার। গত  সোমবার দিবা গত একরাতেই ছয়টি মিটার চুরি হয়েছে। চুরি যাওয়া এলাকা গুলো হচ্ছে,  উপজেলার কয়া শোভলা গ্রামের মাঠে গ্রীণ পাইরোলাইসিস কারখানার মালিকের মেহেদী হাসানের বৈদ্যুতিক মিটার, পুকুরিয়া গ্রামের মাঠে শাহানুর আলম শ্যান্টুর গভীর নলকূপ, করমজির মাঠে আসলাম হোসেনের গভীর নলকূপ, পাঠানধারা গ্রামের আজাদ হোসেনের গভীর নলকূপ,কাদোয়া গ্রামের মাঠে শহিদুল ইসলামের গভীর নলকূপ, কয়া শোভলা গ্রামের মাঠের খোরশেদ আলমের গভীর নলকূপ এবং গোপীনাথপুর মাঠের মাসুদ রানার গভীর নলকূপে চুরি করতে এসে চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়ে চলে যায় চোরেরা।

গ্রীণ পাইরোলাইসিস কারখানার কর্মচারী সোহেল রানা বলেন, আমরা রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি কারখানার পাশে বৈদ্যুতিক পোল থেকে মিটার খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। পোলে লোহার খাঁচার মধ্য রাখা ছিল মিটার। সেখানে একটি চিরকুটে একটি মোবাইল নম্বর রাখা ছিলো।

গোপীনাথপুর মাঠের গভীর নলকূপের মালিক মাসুদ রানা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রাত যখন তিনটা বাজে তখন আমি জেগে ছিলাম গভীর নলক‚পের ঘরে। ৮-১০ জনের একটি দল আমার ঘরে এসে আমাকে ঘরের মধ্য আটকে রাখেন। আমি জেগে থাকায় তাঁরা আমার মিটার চুরি করেনি। তবে তাঁরা হুমকি দিয়ে গেছে, তাঁদেরকে চাঁদা না দিলে পরবর্তীতে আমার মিটারও চুরি করে নিয়ে যাবেন।

পুকুরিয়া গ্রামের মাঠে গভীর নলকূপের মালিক শাহানুর আলম শ্যান্টু রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রাতে নলক‚পের ঘরে ড্রেনম্যান ঘুমিয়ে ছিল। সকালে দেখে লোহার মিটার বক্সের তালা কেটে মিটার খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। সেখানে একটি কাগজে মোবাইল নম্বর লিখা রয়েছে। বিকাশে চোরেদের চাহিদা অনুয়ায়ী টাকা পাঠালে মিটার ফেরৎ পাওয়া যাবে। বার বার এলাকায় মিটার চুরি হচ্ছে কিন্তু প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

জানতে চাইলে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, চুরি রোধে আমরা নিয়োমিত এলাকায় মাইকিং করে গভীর নলকূপের মালিকসহ স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তাঁর পরেও এলাকায় মিটার চুরি বন্ধ হচ্ছে না।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, গতকাল সোমবার  দিবাগত রাতে গভীর নলকূপের মিটার চুরির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতি মধ্য আমরা অভিযান পরিচালনা করে কয়েকজন মিটার চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি, আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!