ময়মনসিংহ এ পর্যন্ত মানব পাচারের ১৬৩টি মামলা দায়ের হলেও নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র দুটি মামলা। ট্রাইব্যুনাল না থাকায় এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহে ৫২, জামালপুরে ১২, নেত্রকোনায় ৮৯ এবং শেরপুরে ১০টি মানব পাচারের মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসনের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে `মানব পাচারের শিকার ব্যক্তির সুরক্ষা ও সহায়তায় জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থার কাঠামো` শীর্ষক বিভাগীয় ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ তথ্য উঠে আসে। কর্মশালার আয়োজন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও বিভাগীয় প্রশাসন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক একেএম মাসুদ আলী বলেন, মানব পাচারের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি। তবে সামাজিক ও আইনি জটিলতার কারণে অনেক ভিকটিম মামলা করতে সাহস পান না। যদিও অন্যান্য বিভাগের তুলনায় ময়মনসিংহ বিভাগে মানব পাচারের সংখ্যা তুলনামূলক কম।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ বলেন, মানব পাচারের ঘটনাগুলো কেসস্টাডি আকারে ডকুমেন্টেশন করা হলে জনসচেতনতা বাড়বে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া-এই দুটি সীমান্তবর্তী উপজেলা দিয়ে মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। বিজিবিকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এসব ঘটনা প্রচার ও প্রকাশের অভাবে অনেক সময় অজানাই থেকে যায়।
সভাপতির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান জানান, "আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে মানব পাচারের ভিকটিমরা অনলাইনে অভিযোগ জমা দিতে পারবেন। এতে ভিকটিমদের হয়রানির শিকার হতে হবে না। অভিযোগ ফর্ম পূরণের পর পুলিশ, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য পেয়ে ভিকটিমকে সহায়তা করবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. ইউসুফ আলী এবং বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন) মো. হাসানুল ইসলাম।
এছাড়াও কর্মশালায় নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আল ইমরান, শেরপুরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমদ, জামালপুরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ বিন রশীদ, নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান, শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ খাতুন, জামালপুরের সহকারী পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আনোয়ার আজিজসহ (টুটুল) বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :