কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে অর্থ সংকটে থাকা দারিদ্র্য পরিবারের সন্তান শিমা আক্তার চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি নিয়ে। বিষয়টি প্রশাসনের নজের আসলে তার দায়িত্ব নেয় লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিমার হাতে ভর্তির প্রয়োজনীয় টাকাসহ শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন। এতে ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন নিয়ে অন্ধকার দূর হয়েছে শিমার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা ও কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস।
শিমা কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালীয়া গ্রামের আলী আহমেদের মেয়ে। তারা ৬ ভাই বোন। এরমধ্যে সে পরিবারের পঞ্চম সন্তান। সম্প্রতি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৩১৬তম স্থান অর্জন করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে সুযোগ পায় শিমা।
শিমা আক্তার বলেন, মেডিকেল পড়া আমার স্বপ্ন ছিল। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে আমি ভর্তির জন্য চুড়ান্ত হয়েছি। কিন্তু টাকার অভাবে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। এখন জেলা প্রশাসন ও কমলনগর উপজেলা প্রশাসন আমাকে ভর্তির জন্য আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। আমি যেভাবে সবার সহযোগীতা পেয়েছি, একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে আমিও অন্যদের সহযোগীতায় কাজ করবো।
শিমার মা আয়েশা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে কৃষিকাজসহ দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। অভাবের সংসারে টানাপোড়নের মাধ্যমে শিমাকে পড়ালেখা করিয়েছি। সে এখন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। আমি চাই, সেও যেন ভবিষ্যতে অন্যের উপকারে এগিয়ে আসে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজীব কুমার সরকার বলেন, দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী কঠোর পড়ালেখার মাধ্যমে শিমা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি নিয়ে তার শঙ্কা ছিল। বিষয়টি আমাদের নজরে আসা মাত্রই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। প্রাথমিকভাবে তার ভর্তিসহ শিক্ষাকার্যক্রমের আনুসাঙ্গিক খরচের জন্য আমরা তাকে সহায়তা করেছি। ভবিষ্যতেও যে কোন প্রয়োজন জেলা প্রশাসন ও কমলনগর উপজেলা প্রশাসন তার পাশে থাকবে। শুধু শিমার ক্ষেত্রেই নয়, জেলার প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের তাদের শিক্ষাজীবনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য যা প্রয়োজন জেলা প্রশাসনের সেই উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
আপনার মতামত লিখুন :