ঢাকা শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

৬০ বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে মিনতী রানীর মিষ্টি’র সুনাম

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম

৬০ বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে মিনতী রানীর মিষ্টি’র সুনাম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাস্তার পাশে আলো বিহীন ছোট টিনের ঘর। ঘরের ভেতরে একটি দরজা খোলা সামনে ছোট একটি গ্লাস দিয়ে ঘেরা মিষ্টি রাখার জায়গা। দেখতে আর দশটা সাধারণ দোকানের মতো না হলেও গুণ, মান আর স্বাদে অতুলনীয়। সাইনবোর্ড 

বিহীন মিষ্ঠির দোকানের নাম মিনতী রানী মিষ্ঠান্ন ভান্ডার। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি বাজারের গোল চত্বরের সামনে এর অবস্থান।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের আগে থেকে গড়াইটুপি বাজারে ছোট একটা ঘরে দোকানটির যাত্রা। সোনাতন অধিকারী তার স্ত্রী শ্রী মিনতী রানী অধিকারীর নিয়ে মিষ্টি তৈরি শুরু করেন। মিষ্টি বিক্রির টাকা দিয়ে চলত তার সংসার।

সোনাতন অধিকারীর মৃত্যুর পর দোকানের হাল ধরেন তার স্ত্রী মিনতী রানী অধিকারী। দিনে দিনে মানুষের মুখে মুখে মিনতী রানীর মিষ্ঠির কথা ছড়িয়ে আছে। ৬০ বছর ধরে চলছে দোকানটি।

শ্রী মিনতি রানী অধিকারী (৮০) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি গ্রামের মৃত সোনাতন অধিকারির স্ত্রী। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর গড়াইটুপি বাজারে ২ থেকে ৩ কেজি দুধের ছানা দিয়ে নিজ হাতে কারো সহযোগিতা ছাড়াই মিষ্টি তৈরি করেন। প্রতি কেজি মিষ্টি বিক্রি করেন ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে।শুধু মিষ্টি নয় তৈরি করেন সু-স্বাধু মিঠাই, সাদা জাম, কালোজাম ও গজা। খরচ বাদ দিয়ে দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করে থাকে।

ভুক্তোভোগী শ্রী মিনতি রানী অধিকারী বলেন, আমার ওস্তাদ আমার স্বামী আমি তিনার কাছে এ কাজ শিখেছি। আমরা দুইজন একসাথে দোকানে বেচা কেনা করতাম তিনি মারা গেলে আমি একাই এ কাজ করি।এখান থেকে যে টাকা আয় হয় এ দিয়ে আমার সংসার চলে যায়। আগে যাওবা বেচা কেনা হত এখন একেবারে কম বিক্রি হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল দিতে না পারায় পাশের দোকানদার বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিয়েছে। যার কারনে সন্ধারপর বেচাকেনা করতে আমার অনেক কষ্ট হয়। শুধু তাই নয়
এত বয়স হলো এখন সরকারি ভাবে কোন সহযোগীতা পায়নি এমন কি এত শীত পড়ছে অনেকে কম্বল পেয়েছে আমাকে কেউ একটা কম্বল দেয়নি। তারপরও আমার কোন দুঃখ বা কষ্ট নেই আমার শরীর সুস্থ থাকলেই আমি আয় করতে পারবো।

গড়াইটুপি গ্রামের জুল হোসেন বলেন, মিনতী রানী এই বাজারে অনেক দিন যাবত মিষ্টির ব্যবসা করে যাচ্ছে তিনি নিজেই সব করেন। অনেক কষ্ট করেন তারপর কারো কাছে কখনও হাত পাতেনি এমন কি কারো কাছে কখনও সহযোগিতা চায়নি।

একই কথা বলেন আকিমুল ইসলাম তিনি বলেন, মিনতি রানী ও তার স্বামী গড়াইটুপি বাজারে মিষ্টি বিক্রি করতো ওনার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি নিজে একাই মিষ্টি তৈরি করেন এবং নিজেই বিক্রি করেন।

মিষ্টির কিনতে আশা হিজলগাড়ি গ্রামের আরিফ হোসেন বলেন, আমি এখান থেকে মাঝে মধ্যেই মিষ্টি কিনে বাড়িতে নিয়ে যায়। এখানে মিষ্টিতে কোন ভেজাল নেই। এবং অনেক পরিস্কার এবং খুব সুন্দর স্বাদ।

আরবি/জেডআর

Link copied!