শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম

বেওয়ারিশ কুকুরের তাড়া খেয়ে ভ্যানচালককে বেঁধে পেটালেন ম্যাজিস্ট্রেট

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম

বেওয়ারিশ কুকুরের তাড়া খেয়ে ভ্যানচালককে বেঁধে পেটালেন ম্যাজিস্ট্রেট

ছবি: সংগৃহীত

বেওয়ারিশ কুকুরের তাড়া খেয়ে  আফজাল খাঁ (৩০) নামে  এক ভ্যানচালককে বেধড়ক মারধর অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর এক নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে। 

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

আফজাল খাঁ রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের মৃত আনছের খাঁর ছেলে। 

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন ভ্যানচালক আফজাল খাঁ (৩০)। তবে থানার ওসি বলেন, এ ঘটনায় কোনো এজাহার পাননি তিনি।

এজাহারে আফজাল খাঁ বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের শ্বশুরবাড়ি আমাদের এলাকায় হওয়ায় তিনি মাঝেমধ্যে তার শ্বশুরবাড়িতে আসেন। গত ৩০ জানুয়ারি তিনি তার পরিবার নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় হাঁটাচলা করা অবস্থায় একটি বেওয়ারিশ কুকুর তাকে ধাওয়া করে। তিনি পরবর্তীতে ওই বেওয়ারিশ কুকুরের মালিকের খোঁজ করলে অজ্ঞাত ব্যক্তি কুকুরটি আমার বলে তাকে জানায়। পরে তিনি থানা পুলিশের মাধ্যমে আমাকে তার সেরেস্তায় ডেকে পাঠান। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমি ও আমার মেজো ভাই মো. সাহেব আলী খান জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় তার চেম্বারে গেলে তিনি আমাকে ওই কুকুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আমি তাকে বলি, কুকুরটি আমার না এবং কুকুরটি কার তাও আমি জানি না। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার সেরেস্তায় থাকা একটি দড়ি দিয়ে আমার হাত পিঠমোড়া করে বাঁধেন এবং আমাকে একটি চেয়ারের ওপর হামু দিতে বলেন। আমি তার কথা মতো চেয়ারের ওপরে হামু দিলে তিনি একটি কাঠের রুল দিয়ে আমার পশ্চাৎদেশসহ পিঠে আনুমানিক ৩০টি আঘাত করেন। এতে আমার পশ্চাৎদেশসহ পিঠে রক্তজমাট নিলাফুলা ব্যথাযুক্ত জখম হয়। তখন সুমন হোসেন বলেন যে, ওই কুকুরটি যদি এলাকায় আবার দেখা যায় এবং আমি যদি এই বিষয় নিয়ে কাউকে জানাই তবে তিনি আমার নামে মামলা দিয়ে আমাকে জেল খাটাবেন। পরে আমার ভাই আমাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

তিনি বলেন, বাড়াইজুড়ি বেলতলা বাজারে দু’টি বেওয়ারিস কুকুর থাকে। অনেক মানুষই কুকুর দু’টিকে খাবার দেয়। আমিও বাজারে ভ্যান চালাই। কুকুর দু’টিকে দেখলে আমি মাঝেমধ্যে রুটি-বিস্কুট দেই। কিন্তু কুকুর দু’টি আমার পোষা কুকুর না। সেই কুকুর ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনকে তাড়া করায় উনি আমাকে ওনার খাস কামরায় ডেকে আমার হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে চেয়ারে বসিয়ে পিটিয়েছে। এ ঘটনায় আমি সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছি।

আফজাল খাঁর ভাই মো. সাহেব আলী খান বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আসাদ আমার ভাই আফজালকে খুঁজতে আমাদের বাড়িতে যান। তবে সেসময় আফজাল বাড়িতে ছিল না। শনিবার সকালে আমি আমার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে থানায় এসআই আসাদের কাছে গিয়ে আমার ভাইকে খোঁজার বিষয়ে জানতে চাই। তখন এসআই আসাদ বলেন ম্যাজিস্ট্রেট সুমন স্যার তাকে পাঠিয়েছিলেন। এসময় এসআই আসাদ ম্যাজিস্ট্রেট সুমন স্যারকে ফোন করলে তিনি বিকেলে আমাদের জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় তার খাস কামরায় যেতে বলেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমরা সেখানে যাওয়ার পর তিনি আফজালকে তার কক্ষে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে মারপিট করেন। আমি তখন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমার ভাই খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেঁটে বাইরে বের হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করে। এসময় আমি আমার ভাইকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেই। তখন থানা থেকে আমাদের ফোন করা হলে আমরা থানায় গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করি। পরে আমার ভাইকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমি মোটরসাইকেল নিয়ে আমার শ্বশুরবাড়ি যাই। মোটরসাইকেলে আমার স্ত্রীও ছিল। হঠাৎ একটি কুকুর আমাদের তাড়া করে। এতে আমরা অনেক ভয় পেয়ে দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পাই। এসময় স্থানীয় লোকজন জানায় কুকুরটি আফজাল খার এবং কুকুরটি প্রায়ই পথচারীদের তাড়া করে। যে কারণে আমি পুলিশ দিয়ে আফজাল খাকে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য খবর পাঠাই। শনিবার বিকেলে তিনি আমার এখানে আসেন। এসময় আমি ওই কুকুরের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি স্বীকার করেন যে কুকুরটি তার। আমি তাকে ওভাবে রাস্তায় কুকুর ছেড়ে দিতে নিষেধ করি। যে কুকুরের মালিক আছে সেই কুকুর কাউকে কামড়ালে নিয়মিত মামলা হতে পারে। এ বিষয়টি আমি তাকে বলে আইনগতভাবে একটু ভয়ও দেখাই। যাতে এ বিষয়ে সে একটু সিদ্ধান্ত নেয়। কেন সে আমার এখান থেকে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে তা আমার বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারব না।

আরবি/এসবি

Link copied!