ঢাকা রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি দুর্বৃত্তদের হামলায় ১০ মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি দুর্বৃত্তদের হামলায় ১০ মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে আবারও মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারসহ বিদ্যুৎ লাইনে হামলা চালিয়েছে পাহাড়ের মধ্যে থাকা দুর্বৃত্তরা। চাঁদা না পেয়ে রাঙামাটিতে ৪টি ও খাগড়াছড়িতে ৬টি মোট ১০টি মোবাইল টাওয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তারা। এতে দুই জেলার লাখো মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়-রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ও ছনখোলা এলাকায় ৪টি টাওয়ার। পাশা-পাশি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার ঝাড়ুলছড়ি, বড়াদম, সাধনাটিলা, বাঘাইছড়ি মূখ,কারবারি পাড়া এলাকায় ৫টি ও মানিকছড়ি উপজেলায় -১টিসহ মোট ১০টি টাওয়ারে হামলা চালিয়ে ক্যাবল তার কেটে দিয়ে নেটওয়ার্ক  বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া  হয়। এতে সার্ভার রুম, মিটার ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি ভাঙচুর করা হয়েছে।

এর আগেও, গত ২২ জানুয়ারি ভোরে একই কায়দায় দুর্বৃত্তরা মোবাইল টাওয়ার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল। পরবর্তীতে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে মোবাইল টাওয়ার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হলেও ২/৩ দিনের ব্যবধানে সমস্ত টাওয়ারে আবারও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মিটার ভাংচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। এতে ওইসব এলাকার  নেটওয়ার্ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়াসহ তাদের নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে স্থানীয় জনগণ।

এসব ঘটনায় স্থানীয়ভাবে পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের সম্পৃক্ততার কথা শোনা গেলেও, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ দেয়নি। এমনকি ক্যামেরার সামনে কথা বলতেও অপরাগতা স্বীকার করে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে, স্থানীয় লোকজন বলছেন, চাঁদার দাবিতেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

ঘটনায় শুধু মোবাইল নেটওয়ার্ক নয়, পুরো এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

রাঙামাটি  নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজির আলম বলেন, এ ঘটনা আমরা লোকের মূখে মূখে শুনেছি। পুরো ঘটনার বিষয়বস্তু জানতে একাধিক বার মোবাইল টাওয়ারের লোকজনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই ব্যাপারে কেউ কথা বলতে চাইতেছে না। থানায়ও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছে। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চললেও কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শক্ত হাতে পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

স্থানীয়রা অরো বলেন, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অভিযানের দাবি জানিয়েছেন, যাতে পাহাড়ি অঞ্চলে সাধারণ মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে এবং স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার হয়। পাহাড়ে চাঁদাবাজি নতুন কোন ইস্যু নয়। প্রতি বছর তিন পার্বত্য জেলায় ৩-৪শ‍‍` কোটি টাকা  চাঁদাবাজি করা হয়।  

আরবি/জেডআর

Link copied!