মেধার জোরে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের মারুফ হাসানের পড়াশোনা। পরিবারের একমাত্র ভরসা বাবার আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের পদমপুর কাঁঠালতলি গ্রামের বাসিন্দা মারুফ হাসান ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী। এসএসসি ও এইচএসসি দুটোতেই জিপিএ-৫ অর্জন করেন। তবে পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে ভালোভাবে কোচিং করার সুযোগ পাননি। তারপরও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সারাদেশের মেধা তালিকায় ১৪৪তম স্থান অধিকার করেন।
কিন্তু মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা জোগাড় করা তার হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। তার বাবা ইউসুফ আলী দীর্ঘদিন ধরে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন, যার ফলে উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। মা মরিয়ম আক্তার গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে মারুফই বড় এবং এতদিন কোচিং করানো ও রাজমিস্ত্রির কাজ করে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন।
মারুফ বলেন, "বাবা সবসময় আমাদের পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন, কিন্তু এখন নিজের চিকিৎসার খরচও জোগাড় করতে পারছেন না। এতদিন অনেক কষ্ট করে চলেছি, কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য যে টাকা দরকার, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি কারও সহযোগিতা পাই, তাহলে আমি গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির ডাক্তার হয়ে সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।"
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, "বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। মারুফের পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কোনো আবেদন আসে, তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করব। ব্যক্তিগত ভাবেও আমি তাকে সাহায্য করব।"
মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে তার স্বপ্নপূরণে সহায়তা করতে সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আপনার মতামত লিখুন :