‘আপনার স্বামীর পা কেটে গেছে দরজা খোলেন’ এই বলে শুক্রবার রাতে (৩১ জানুয়ারি) গৃহবধূর ঘরে ঢুকে শিশু সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে হাত-মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে তিন ব্যক্তি। এরপর পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তিন দিন অসুস্থ থাকায় থানায় মামলা করতে পারেনি ওই নারী। পরে সোমবার (৩ জানুয়ারি) থানায় না গিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগী তিন সন্তানের জননী, তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে।
সোমবার রাতে ভুক্তভোগীর বাড়ি পরিদর্শন করেছেন রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক ও রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া।
ওই নারীর বড় মেয়ে স্বামীর সঙ্গে ঢাকার নারায়ণগঞ্জ বন্দরে, মেজো মেয়ে নানার বাড়িতে ও তিনি ছোট ছেলেকে নিয়ে রায়পুর উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছিলেন। সেখানেই ঘটনাটি ঘটে মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলো-দক্ষিণ চরবংশী ইউপির চরলক্ষি গ্রামের হাওলাদার বাড়ির আজিদ আলী হাওলাদারের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩২), একই এলাকার জুরমুত হাওলাদারের ছেলে মিলন হাওলাদার (২৮) ও তাদের সহযোগী অচেনা যুবক (২৯)।
ঘটনার পর রাত ১১টার সময় অভিযুক্ত আলমগীর ও মিলন ওই রাতে চরলক্ষি গ্রামের রতন নামের এক খামারির একটি গাভি গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় আলমগীরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। এ সময় মিলনসহ দুই জন পালিয়ে যায়।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ধর্ষণের কথা জানিয়ে সোমবার দুপুরে এক গৃহবধূ পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। রাতে রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারী বাদী হয়ে মামলা করেছেন আলমগীর, মিলন ও অচেনা এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এ ঘটনার পর গরু চুরির ঘটনায় গণপিটুনির শিকার আলমগীরকে শনিবার বিকালে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন গৃহবধূর অভিযোগ পাওয়ার পরই অভিযান চালিয়ে মিলন হাওলাদারকে সদরের একটি রেস্তোরাঁ থেকে আটক করেছে পুলিশ।
মিলন হাওলাদারের দাবি, আমি কিছুই জানি না, কেন পুলিশ আমাকে ধরে এনেছে, তাও বলতে পারছি না। তবে শুনেছি আলমগীর এক কৃষকের গরু চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনি খেয়ে লক্ষ্মীপুর জেলে আছে।
ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ভ্যানগাড়ি চালান। বাড়িতে স্বামী না থাকার সুযোগে ওই ব্যক্তিরা ঘরে ঢুকে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এর মধ্যে আলমগীর ও মিলনকে চিনতে পেরেছেন গৃহবধূ। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :