প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশবান্ধব কাগজের কলম তৈরি করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ আমিরুল ইসলাম। তার উদ্ভাবিত কলম ব্যবহারের পর, এটি মাটিতে ফেললে গাছের চারা জন্মাবে, যা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের জন্য আয়ের পথও খুলবে।
আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের মোঃ মনিরুল ইসলামের ছেলে আমিরুল ইসলাম গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পরিবেশবান্ধব কলম তৈরির উদ্যোগ নেন। দুই মাসের চেষ্টার পর, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে তিনি সফলভাবে কাগজের কলম তৈরি করেন। এই কলমের মধ্যে বিভিন্ন গাছের বীজ ভরে দেওয়া হয়, যা মাটিতে ফেললে গাছের চারা জন্ম নেয়।
এ কলমের বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি প্লাস্টিকের কলমের মতো পরিবেশ দূষণ করে না। কাগজের কলমটি মাটিতে মিশে যায় এবং গাছের চারা জন্মায়, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। বর্তমানে, এই কলমটি ৫ টাকা থেকে ১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে এবং আমতলী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর চাহিদা বেড়েছে। আমিরুলের এমন উদ্যোগ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সকলেই তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
[32996]
এ বিষয়ে আমিরুলের বড় ভাই জহিরুল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, প্রথমে এই কাজে সারা না দিলেও এখন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে আমিরুলকে সহযোগীতা করেছে। পাশাপাশি তিনি সরকারকে সহযোগিতার আহবান জানান।
স্থানীয় এক ছাত্র ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা রেজাউল করিম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন কাগজ দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় আমিরুলের তৈরি কলম একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই কলম ব্যবহার বৃদ্ধিতে পরিবেশের যেমন উপকার হবে পাশাপাশি প্লাস্টিক বর্জন হবে। আমিরুলের এই উদ্যোগ দেশে ছড়িয়ে পড়ুক।
উদ্যোক্তা মোঃ আমিরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দুই মাস চেষ্টার পরে প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে কাগজের তৈরি পরিবেশ বান্ধব কলম তৈরি করেছি। এতে একদিকে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমবে অন্য দিকে কলমটি ব্যবহার শেষে মাটিতে ফেলে রাখলেই ফলদ গাছের চারা জন্মাবে। প্লাস্টিকের তৈরি কলম শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করছে। এ কলম ব্যবহার করলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হবে না।
উল্টো পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষার পথ সুগম হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার লক্ষ্য হলো পাঁচ টাকা ব্যয়ে হাজার টাকার আয়ের পথ সৃষ্টি করা। মানুষ গাছ রোপনে আগ্রহী না। আমার এ উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে অনায়সেই গাছ মাটিতে জন্ম হবে। কারন যেখানে এ কলম ফেলা হবে সেখানেই ফলদ গাছের চারা জন্ম হবে। তিনি আরো বলেন, সরকারী আর্থিক সহায়তা পেলে পরিবেশ বান্ধব এ কলম দেশের সর্বত্র বাজারজাত করা যাবে।
[33000]
আমিরুল ইসলামের বাবা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমিরুল লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে। তারই সফলতা পরিবেশ বান্ধব কাগজের কলম তৈরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমিরুল ইসলামের শিক্ষক ও আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম, এ, হান্নান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমিরুল ইসলাম প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশ বান্ধব কলম তৈরি করেছেন। এতে এক দিকে পরিবেশ সুরক্ষিত হবে অন্যদিকে আর্থিক সাশ্রয় হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম রুপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমিরুলের এমন উদ্যোগকে প্রসারিত করতে সকল ধরনের সহায়তা করা হবে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ।
