ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় সাত বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের দায়ে শহিদ মিয়া (২৮) নামে এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় দেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি শহিদ নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লি ইউনিয়নের আগ মুশুল্লি গ্রামের বাসিন্দা। একই গ্রামের আবদুল কাইয়ুম ও পলিনা খাতুন দম্পতির ৭ বছর বয়সী ছেলে মো. তাসিন ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয়। সেদিনই নান্দাইল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির মা। এরপর মুঠোফোনের একটি নম্বর থেকে ৩০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ অর্থ না দিলে শিশুটিকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
পরে ১৭ আগস্ট শহিদ মিয়াকে আটকের পর তার দেখানো স্থান থেকে শিশু তাসিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মুক্তিপণ না দেওয়ায় শিশুটিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর একটি টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর ফেলে রাখা হয়েছিল। ওই ঘটনায় শিশুটির মা ১৭ আগস্ট বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে থানায় আরেকটি মামলা করেন। আসামিদের সঙ্গে বাড়ির সীমানা ও গাছপালা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে পুলিশ মামলাটির তদন্ত শেষে শহিদ মিয়া, তার বাবা তাহের উদ্দিন ও মা তহুরা খাতুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলাটির দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত। রায়ে শহিদ মিয়াকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাকি দুই আসামি তাহের উদ্দিন ও তহুরা বেগমকে খালাস দেন বিচারক। রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন আসামি শহিদ মিয়া। ময়মনসিংহ আদালত পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মনোয়ার বেগম এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এপিপি মো. শামীম উল আজম খান।
আপনার মতামত লিখুন :