প্রকৃতিতে ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজছে শীতের বিদায় ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। শীতের বিদায়ের সাথে সাথে বসন্তের আগমনে ফাল্গুনের হাওয়া চারদিক মুখরিত। সময়ের পালাবদলে প্রকৃতির এই খেলায় ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে।
ফাল্গুনের আহ্বানে শিমুল গাছে ফুটেছে পলাশ। গ্রামের পথের দূর সীমানা থেকে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু কলতান। নানা ফুলের সঙ্গে সুর ছড়াচ্ছে আমের গাছের মুকুলও। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস আলোকিত করে তুলছে মানুষের হৃদয়। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গাছে গাছে ভরে গেছে নয়নাভিরাম আমেন মকুল। মুকুলের ভরা মৌসুম না হলেও গত এক সপ্তাহ যাবত শীত কমে আসায় এ বছর আম গাছে আগাম ফুল এসেছে।
বর্তমান আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে মৌসুমী ফল আমের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবু পিযুষ রায়।
তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ করা চাষিরা মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে মুকুল ঝড়ে পড়া রোধ করে পোকা দমনের চেষ্টা করছেন। এ বছর শীত কম হওয়ায় এবং ফাল্গুনের আগেই কুয়াশা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনায় সকল গাছেই আগাম ও বেশি মুকুল ধরেছে।
আগের তুলনায় এলাকায় বেড়েছে আমের বাগান ও চাষ। বাড়ি আঙিনাসহ এলাকায় ব্যক্তিগত বাগানের পাশাপাশি বন বিভাগের উদ্যোগে সরকারি অফিস, বিভিন্ন সড়কের পার্শ্বে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফাঁকা জায়গায় সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছে আমের মুকুলের ঘ্রাণে এখন চারদিক মৌ মৌ করছে।
কৃষি কর্মকর্তা বাবু পিযুষ রায় আরও বলেন, ৯৯ ভাগ মুকুলে কোন গুটি হয় না। তারপরেও পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনায় আমের মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে চাষিরা এবছর ভাল ফলন পাবার আশা প্রকাশ করছি।
আম চাষি ইয়াসিন আলী জানান, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে প্রায় নতুন গাছ। নতুন গাছ হওযায় আগে ভাগেই মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :