উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে আম গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। নানা ধরনের ফল-ফুলের সাথে সৌরভ ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন আমের মুকুলও। সোনালি রঙের আমের মুকুলের মৌ-মৌ গন্ধে সুবাসিত এখন প্রকৃতি। যদিও ঘন কুয়াশার কারণে এ বছর চাষিরা আমের ফলন নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন।
এ বছর আমের মুকুলের সোনালি রঙয়ের নান্দনিক দৃশ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লক্ষণীয়। তাই চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আমের ভালো ফলন হবে- এমন আশাবাদ স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, আম গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে এবার বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। পুরোপুরি মুকুল ফুটতে আরো কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আম চাষ লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় প্রতিবছরই বাড়ির আঙিনা, পুকুরের পাড়, রাস্তার পাশে ও ছাদকৃষিসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় আমের বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন গড়ে ওঠা আমের বাগানগুলোতে বেশিরভাগ গাছই হলো কাটিমন, আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, গোপালভোগ ইত্যাদি জাতের। এসব আম খেতে যেমন সুমিষ্ট, বাজারেও এগুলোর চাহিদা ব্যাপক। তাই কৃষকরা এসব জাতের চারা সংগ্রহ করে তারা বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদনের দিকে নজর বেশি দিচ্ছেন।
উপজেলার বিবিচিচনি ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের জাহাঙ্গীর ও রানিপুর গ্রামের নিজাম জানান, ঘন কুয়াশার কারণে আমের মুকুলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এতে আমের উৎপাদন কমে যেতে পারে। ফলে কৃষকেরা তাদের আম গাছ রক্ষায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের ও সহকারীদের পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান।
একাধিক আম চাষি বলেন, ‘বাড়তি ফলনের জন্য এবং পোকামুক্ত আর আমের রঙ ঠিক রাখতে কীটনাশক ও ভিটামিন দিয়ে আমের গাছ স্প্রে করছি। গাছের গোড়ায় জৈব সারসহ সেচ দিয়েছি যে কারণে মুকুল ভরে গেছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আম বাগানের সঠিক পরিচর্যা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে সার্বক্ষণিক কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন। তবে বাণিজ্যিকভাবে এখনো আম চাষ এ উপজেলা শুরু হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :