খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রায় তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। গত বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হাওয়ায় এবার এই ফসল চাষে বেশি আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ বীজতলা প্রস্তুত করছেন, কেউ কেউ রোপণ করছেন, আবার কেউ কেউ পানি সেচ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দম ফেলার সময় নেই কৃষক-কৃষাণীদের। সার কীটনাশক শ্রমিকের দাম বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। তরমুজ মৌসুমে ক্ষেতগুলোতে এলাকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ মেলাই তারা খুশি।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমাদী, বাগালী,মহেশ্বরীপুর, মহারাজপুর ও কয়রা সদর ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৪২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
সাতালিয়া পূর্ব বিলের আদর্শ কৃষক মো. মিজানুর রহমান (বাবু )বলেন, বাম্পার ফলনের আশায় ধারদেনা করে এ বছর ৩৬ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করিতেছি । কেবল তরমুজের ছোট ছোট পাতা বের হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন হবে। এতে লাভবান হবো ।
একই বিলের কৃষক মো. ফজলু গাজী বলেন, প্রতিবছর তরমুজ চাষ করি, এবারও ১০ বিঘা জমিতে তরমুজ লাগাছি। গতবছরের তুলনায় এবার খরচ অনেক বেশি পড়তেছে, শ্রমিক মজুরি ও জিনিসপএের দাম বেশি।
মসজিদকুড় গ্রামের কৃষক মো. জুবায়ের বলেন, এবছর ১৭০ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করিতেছি। তরমুজের বীজ রোপণ শেষ করেছি, কেবল পাতা বের হচ্ছে।
পাটনিখালী বিলের তরুণ কৃষক মো. হাফিজ বলেন, লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকরি পায়নি। তাই কৃষি কাজ করে পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে আছি। এবছর ১০ বিঘা জমিতে তরমুজের বীজ রোপণ করেছি এখনও চারা বের হয়নি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ ফরিদ হোসেন বলেন, ‘কৃষকেরা ড্রাগন, ড্রাগন সুপার, আস্থা, আস্থা প্লাস, পাকিজা, মালিক-১, এশিয়া সুপার, থাই রেড কিং, বিগ সুপার কিং ও বাংলালিংক জাতের তরমুজ চাষ করছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে ৫০ থেকে ৬০ মেট্রিক টন ফলন হতে পারে। তরমুজ চাষে কৃষকদের হেক্টর প্রতি খরচ হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।’
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। গতবছর তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকলে এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হবে । উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা রাত-দিন পরিশ্রম করে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে এবং সবসময় তাদের পাশে আছে।
আপনার মতামত লিখুন :