৪৫০ টাকার জন্য ভ্যানচালককে হত্যা

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম

৪৫০ টাকার জন্য ভ্যানচালককে হত্যা

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভাড়াবাবদ পাওনা ৪৫০ টাকা চাওয়ার কারণেই মাদারীপুরের শিবচরে ভ্যানচালক মিজানুর রহমান গাজীকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। পরে অটোভ্যানকেও নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা। আদালত ও পুলিশের কাছে এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেপ্তার তিন আসামি।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রেস কনফারেন্সে সহকারী পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিবচর পৌরসভার কেরানীর বাট এলাকার নবীনূর বেপারীর ছেলে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীনের কাছে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের মালামাল পরিবহনের ভাড়া ৪৫০ টাকা পেতেন উমেদপুর ইউনিয়নের চরকাচিকাটা গ্রামের লাভলু গাজীর ছেলে ভ্যানচালক মিজানুর রহমান গাজী। পাওনা ৪৫০ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মিজানুরের সঙ্গে স্বাধীনের কথা কাটাকাটি হতো। বারবার টাকা চাওয়ায় স্বাধীন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ভ্যানচালকের ওপর।

এ ঘটনার জেরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার স্বাধীন তার বন্ধু দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামের হুমায়ুন শিকদারের ছেলে হান্নানকে দিয়ে কেরানীর বাট বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন মিজানুরের ভাড়া বাসা থেকে পাঁচ্চর যাওয়ার কথা বলে ৫০০ টাকায় ভাড়া করে। হান্নান ভ্যানসহ মিজানুরকে কৌশলে কাদিরপুর ইউনিয়নের পবন মোড়লের চর কান্দি গ্রামের একটি ভুট্টা ক্ষেতের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল স্বাধীন ও তার বন্ধু কেরানীর বাট গ্রামের মামুন মিনার ছেলে আল আমিন। মিজানুরকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথমেই স্বাধীন ধারালো ছুরি দিয়ে মিজানুরের গলায় আঘাত করে। আল আমিন ও হান্নান ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরের অন্যান্য স্থানে আঘাত করে। এতে মৃত্যু হয় ভ্যানচালকের।

পরে খুনি ৩ জন ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ৭ ফেব্রয়ারি শুক্রবার ভুট্টা ক্ষেতে মিজানুরের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধারালো একটি ছুরি, নেশাগ্রহণের সরঞ্জাম ও আসামিদের পরিহিত একটি লাল রঙয়ের জ্যাকেট উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন ও আল আমিনের নামসহ অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামিকে করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ হত্যার রহস্য উন্মোচনে শিবচর থানার ওসি মো. রতন শেখের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। পুলিশ প্রথমেই আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন ও আল আমিনকে হেফাজতে নেয়। পরে শিবচর থেকে কাঠালবাড়ি পর্যন্ত এলাকার অন্তত ৫০টি স্থানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হত্যার স্থান থেকে উদ্ধার লাল রঙয়ের জ্যাকেট পরিহিত হান্নান ভ্যানসহ মিজানুরকে নিয়ে যাচ্ছে।

অন্য আরও সূত্র থেকে পুলিশ এ হত্যার সঙ্গে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন ও আল আমিনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ হান্নানকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করে সোমবার বিকেলে মাদারীপুর জেলহাজতে পাঠায়। আসামিরা আদালত ও পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

আরবি/এসআর

Link copied!