ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

শুকনো মৌসুমেও সড়কে খানাখন্দ, বিপাকে পথচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ০২:২১ পিএম

শুকনো মৌসুমেও কাঁচা সড়কে খানাখন্দ, কোথায় আবার হেঁটে যাওয়ার জন্য ইট বা বস্তায় মাটি ভরে রাখা হয়েছে সড়কে। এতে বিপাকে পড়েছেন রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ৬ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীসহ কয়েক গ্রামের লোকজন। এতে শুকনো মৌসুমেই দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের দাবি তাদের।

এমনই এক কাঁচা সড়কের দেখা মিলেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দত্তেরবাজার ইউনিয়নের কোনাপাড়া থেকে পাগলা বাজার সড়ক। এই কাঁচা সড়কটি এলাকার কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাগলা থানা ও বাজার সংলগ্ন ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পেছনের ২টিসহ ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। একই সাথে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চলাচলের জন্য কোনাপাড়া সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই। একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগী ও স্বজনদের। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে এলেও কোনো কাজ হয়নি।

সড়কের পাশে রয়েছে, হাজী আজিম উদ্দিন দারুল উলূম মাদ্রাসা, চাইল্ড কেয়ার মডেল একাডেমি। এই পথে যাতায়াত করা ৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাগলা আস্কর আলী দাখিল মাদ্রাসা, সাহেব আলী একাডেমি, লুৎফুন্নেছা বালিকা বিদ্যানিকেতন, পাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী।

সূত্র জানায়, উপজেলার দত্তেরবাজার ইউনিয়ন থেকে পাগলা বাজারে প্রবেশের এই কোনাপাড়া সড়কটি প্রায় এক কিলোমিটার অংশ খুবই বেহাল। কাঁচা রাস্তার দুই পাশের বাসিন্দাদের দখলে হারিয়ে যাচ্ছে এই সড়কটি। রাস্তার পাশে বসবাস করা বাসিন্দারা কোনাপাড়া সড়কে বেড়া দিয়ে নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে। যে কারণে সড়কটি ধীরে ধীরে সরু হয়ে আসছে। এ ছাড়া এই সড়কে ফেলা হচ্ছে আশপাশের ময়লা আবর্জনা। এর দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা নাক চেপে ধরে হেটে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে পাকা করা দরকার। এক কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রায় সময়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

পাগলা লুৎফুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী আকলিমা আক্তার বলেন, বর্ষায় জুতা হাতে আবার কখনো অতিরিক্ত পোশাক স্কুল ব্যাগে নিয়ে যেতে হয়। বছরের পর বছর ধরে এই সড়কের বেহাল দশার কারণে আমাদের যাতায়াতের জন্য খুব কষ্ট হয়।

পাগলা সাহেব আলী একাডেমির প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, আশপাশের ৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং বাজারে যাতায়াতকারী অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগের কারণ এই কোনাপাড়া সড়ক।

দত্তেরবাজার ইউনিয়নের পাগলা বাজারের ব্যবসায়ি আসাদুল্লাহ খান বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এজন্য সড়কটি দ্রুত পাকাকরণ জরুরি।

দত্তেরবাজার ইউনিয়নের পাগলা বাজারের মনিহারী দোকানি নুরুল মন্ডল বলেন, রাস্তায় এখন আর রিকশা, সাইকেল চলাচল করতে দেখি না। সড়কজুড়ে উচু-নিচু আর গর্ত। যে কারণে রাতের আঁধারে হেঁটে যাওয়া দায়।

এলাকার রিকশা চালক লাইছু মিয়া বলেন, কোনাপাড়ায় কেউ মালামাল নিয়া যাইতে পারে না। এই রাস্তা খারাপের লাইগা রিকশাও চালানো যায় না।

পাগলা কোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, রাস্তার কারণে লজ্জায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে আনতে পারি না। বর্ষাকালে হাট বাজারে যেতে বেশি কষ্ট হয়।

পাগলা লুৎফুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন, এই কোনাপাড়া রাস্তার জন্য অনেক শিক্ষার্থী বর্ষাকালে স্কুলে আসে না। রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ। গত এক যুগেও এই সড়কে সামান মাটি পর্যন্ত ফেলেনি কেউ।

স্থানীয় সরকার বিভাগের গফরগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব মুর্শেদ বলেন, সহকারী প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে সড়কটি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।