ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্কের স্টাফ ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষ, আহত ৩০

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৪:১১ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকার ধামরাইয়ের আলাদিন পার্কে পিকনিকে আসা  শিক্ষার্থীদের সাথে পার্কের স্টাফ ও এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে হাসান আল মুত্তাহিদ নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) তে ভর্তি আছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার পরিদর্শক (ওসি) মনিরুল ইসলাম। এর আগে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকায় অবস্থিত আলাদিন পার্কের ভিতরে এবং বাহিরে এই ঘটনা ঘটে।

মিরপুর বনফুল গ্রীনহার্ড আদিবাসী কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাকিদুল ইসলাম বলেন, কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ প্রায় ৬ শত জন পিকনিক করতে আসছি ধামরাইয়ের আলাদিন পার্কে। ওয়াটার পার্কের লকারে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ না দেখে উত্তেজিত কয়েক জন শিক্ষার্থী পার্কের কয়েকটি গ্লাস ও চেয়ার ভেঙে ফেলে। পরে আমরা পার্কের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হই এবং বিষয়টি মিটে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে পার্কের লোকজন ও এলাকাবাসীরা এসে শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। মেয়ে শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গাড়িতে উঠে বসলে তাদের উপরও হামলা চালায় এবং আটটি বাস ভাঙচুর করে। পার্কের মালিকের ছেলে ও ম্যানেজারের নেতৃত্বে পার্কের স্টাফসহ স্থানীয় এলাকাবাসী আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর এ হামলা করে। রিপন হালদার নামে আমাদের এক শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন এবং হাসান আল মুত্তাহিদ নামে কলেজ শাখার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়ে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে। 

মিরপুর বনফুল গ্রীণহার্ড স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মরিয়ম জামিলা বলেন, বহিরাগত লোক এনে পার্কের লোকজন মিলে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। আমাদের ৭/৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রায় ১৬ জন শিক্ষার্থী ও ১ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। পার্কের লোকজনের হাতে লোহার রড, বাশের লাঠি, কাঠ দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।

অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সুধীর কুমার মন্ডল বলেন, পার্কে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে পার্ক ও শিক্ষার্থীদের সাথে। সব মিটে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে পার্কের মালিকের ছেলে রিফাত ও ম্যানেজার বাহির থেকে লোকজন এনে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা শিক্ষক চোর ডাকাত নই। লোহার রড, বাশের লাঠি দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। ধামরাই থানায় অভিযোগ করার জন্য এসেছি।

পার্কের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বলেন, একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে  শিক্ষার্থীরা পার্কে ভাংচুর করেছে। প্রথমে সব মিটমাট হলেও বিকেলে শিক্ষার্থীরা যাওয়ার সময় ভাঙচুর করে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পার্কের মালিকের ছেলে ও পার্কের ডিরেক্টর রিফাত হোসেন বলেন, প্রথমে একজন শিক্ষার্থীর মোবাইল হারানো গেছে এমন শুনা যায়।

পরে শিক্ষার্থীরা ওয়াটার পার্কের যে কজন স্টাফ ছিলো তাদের মারধর করে এবং ভাঙচুর করে।

পরে আমাদের লোকজনও তাদের উপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসেও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় গাড়ি ভাঙচুর করে। উভয় পক্ষের লোকই আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। লিখিত কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।