গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের বেহাল দশার কারনে ১০ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও হয়নি নতুন ভবন। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেই ভবনেই চলছে নিয়মিত পাঠদান। বিদ্যালয় ভবনের বেহাল দশার কারণে যে কোন সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা।
উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের বদরতলা গ্রামে স্থাপিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ১৫১ নং বদরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। ১৯৯০ সালে রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা হয়। এই বিদ্যালয়ের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটির পলেস্তারা খসে পড়ায় এবং বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেওয়ায় ২০১৪ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে বিদ্যালয়টির অন্য কোন ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় ভবনটির ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ভিজে যায় শিক্ষার্থীরা। এসব নানা কারণে দিন দিন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা কমতে থাকে।
বর্তমানে এই বিদ্যালয়টিতে ৫৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকগণ দ্রুত সময়ের নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী কৃষ্ণা বিশ্বাস বলেন, অনেক সময় বিদ্যালয়ের ছাদের পলেস্তারা খসে আমাদের গায়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় পানিতে আমরা ভিজে যাই। এতে আমাদের লেখাপড়ায় সমস্যা হয়। বিদ্যালয়ের এই অবস্থার জন্য অনেক সহপাঠীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। আমরা তাড়াতাড়ি বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন তৈরির দাবি জানাচ্ছি।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাধ্যা রায় বলেন, ক্লাসে আমরা ভয়ে থাকি। কখন কার মাথা উপর ছাদ ভেঙে পড়ে। আমরা চাই নতুন একটি ভবন। সেখানে আনন্দের সাথে যাতে লেখাপড়া করতে পারি।
বদরতলা গ্রামের নরেশ বিশ্বাস বলেন, আমার মেয়ে ইন্দ্রানী বিশ্বাস বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। মেয়েটা স্কুলে যাওয়ার পড়ে কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে এ নিয়ে আমরা চিন্তায় থাকি। বৃষ্টির মৌসুমে ক্লাসে বসেই ওদের ভিজতে হয়। অনেক সময় বাধ্য হয়ে শিক্ষকদের স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়। আমরা বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দ্রুত এ সমস্যার চাই।
শিক্ষক বিপ্লব হাজরা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসে একের পর এক চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কোন কারণে ভবনটি হচ্ছে না তা আমাদের জানা নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, পিডিবি-৪ এ যে সকল ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কথা ছিল সেগুলো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী জুলাই থেকে পিডিবি-৫ এর আওতায় নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। আশা করছি পিডিবি-৫ এর কাজ শুরু হলে প্রথম দিকেই এই বিদ্যালয়টির জন্য একটি নতুন ভবন হবে।
আপনার মতামত লিখুন :