ভোলার চরফ্যাশনে বিচ্ছিন্ন পর্যটন দ্বীপ ঢালচর ইউনিয়নের দূর্যোগ ত্রান মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত নির্মানাধীন সড়কের ৫ হাজার ইট তুলে নেয়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। গত ১ সপ্তাহ আগে ঢালচর ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি মোক্তার ফরাজী দিবালোকে প্রকাশ্য সড়কের ইট তুলে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও টনক নড়েনি উপজেলা প্রশাসনের। এতে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ঢালচর ইউনিয়নের সাধারন মানুষের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্ধাদের অভিযোগ সড়কের ইট তুলে নেয়ার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বাসিন্ধারা। সরকারি সড়কের ইট লুটের ঘটনায় স্থানীয়রা সাংবাদিক ও প্রশাসনকে জানিয়েও ওই যুবদল নেতার হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অনেকে।
জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে পর্যটন দ্বীপ ঢালচরের মানুষ ও পর্যটকদের যাতায়তের সুবিধার জন্য ঢালচর বাজার থেকে আনন্দ বাজার ভায়া কোষ্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত প্রায় ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি হেরিংবন সড়ক নির্মান করা হয়। তবে সড়কটি ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে অতি জোয়ারের প্রভাবে ওই সড়কটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই সুযোগে যুবদল নেতা মোক্তার হোসেন নিজের কাজের জন্য সড়ক থেকে প্রায় ৫ হাজার ইট তুলে নিয়ে যান। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্ধারা প্রতিবাদ করলে বাড়িঘর গুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেন।
অভিযুক্ত যুবদল নেতা মোক্তার হোসেন জানান, জোয়ারের প্রভাবে সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তিনি সড়ক থেকে কিছু ইট তুলে নিয়ে একটি মসজিদে দান করেছেন।
তিনি সরকারি সড়কের ইট তুলে নিয়ে মসজিদের দান করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্ষমতা থাকলে সবাই করা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢালচর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের একাধিক নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের পতনের পর কথিত এই যুবদল নেতা মোক্তার ফরাজীর তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ঢালচর ইউনিয়নের বাসিন্ধারা। চাঁদাবাজী ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক ডাকাতির মামলা থাকায় দির্ঘদিন এলাকায় ছিলেননা তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সে এলকায় ফিরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ইতোপূর্বে সে ওই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জেলেদের ভিজিএফ চাল রাতের আধারে চুরি করেছে। তখনও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।
ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও ঢালচর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহিদুল ইসলাম ব্যবস্থা কেন নেয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি জানান, এবিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জনিয়েছি। ব্যবস্থা নিবেন তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিএম অলি উল্লাহ জানান, সরকারী সড়কের ইট তুলে নেয়ার ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি তাই কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, সড়কের ইট তুলে নেয়ার বৈধতা কারো নেই। খবরটি শুনে তাকে ডেকে ছিলাম। সে এখনও আসেনি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :