বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগ নিয়ে সংগঠনের ভেতরে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন । গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে তিনি এ পদত্যাগপত্র পাঠান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ৫ আগস্ট গণঅভুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে খুলনার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই একাধিক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে থাকে।
বিশেষ করে সাজিদুল ইসলাম বাপ্পিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন আওয়ামী দখলমুক্ত করার নামে ব্যক্তি বিশেষকে দিয়ে কমিটি গঠন, খাদ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে একই কায়দায় চাঁদাবাজি, বাণিজ্যিক সংগঠনের কমিটি পুর্নগঠনের নামে অর্থ আদায়, মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি ভুক্তভোগীরা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত ও সারজিসকেও জানান।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত সাজিদুল ইসলাম বাপ্পীর ব্যাংক, বিকাশ হিসেবে অস্বাভাবিক রকম লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সাবেক এক বিএনপি নেতার ভাড়া করে দেওয়া অফিস ব্যবহার, আর্থিক সুবিধাগ্রহণসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি হানা দেওয়া, ডিস্ট্রাব করা হবে না-এই আশ্বাসেও সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, খুলনা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা ক্লাব, নৌপরিবহন মালিক গ্রুপসহ বাণিজ্যিক সংগঠনের কমিটি গঠনে হস্তক্ষেপ করে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি গঠনের পর এই প্রবণতা আরও বেড়েছে। সম্প্রতি গঠন হওয়া খুলনা মহানগর কমিটির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
সমস্যা হচ্ছে, ভুক্তভোগীরা এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি সরকারের ওপর মহলে জানানো হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত অভিযোগ দিলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে। শহীদদের রক্ত বেচেঁ টাকা উপার্জনের চেষ্টা শক্ত হাতে মোকাবেলা করার নির্দেশনা আসছে।
এ ব্যাপারে সাজিদুল ইসলাম বাপ্পির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।