রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে তিস্তা রেলসেতু এলাকা।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে সেতুর নিচের সমাবেশস্থলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূল সমাবেশ দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়েছে। টানা ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ দেওয়াসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এরইমধ্যে মঞ্চের সামনে শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এক কাতারে শামিল হয়েছেন তিস্তা রক্ষার দাবিতে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের চোখে-মুখে ক্ষোভ আর আশার ছাপ। একদিকে নদী মৃত্যুর প্রহর গুণছে, অন্যদিকে এরই মধ্যে জেগে উঠেছে জনতার অদম্য সংহতি।
সমাবেশে আসা এক কৃষক বলেন, একসময় এই নদীই ছিল তাদের জীবন জীবিকার একমাত্র উৎস। এখন বালু আর পাথর ছাড়া কিছুই নেই নদীতে। দুই ফসলি জমি এখন মরুভূমি। আবার যখন পানি আসে, বাড়ি ঘর ছাড়তে হয় তাদের।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষ তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়েছেন। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো জন আকাঙ্ক্ষার দাবি। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ঘরে বসে নেই। তারা নিজ দায়িত্বে তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে তিস্তা নদী ১১৫ কিলোমিটার। তার মধ্যে তিস্তা ব্যারেজের উজানে ২০ কিলোমিটার আর ভাটিতে ৯৫ কিলোমিটার। ভাটিতে তিস্তা নদী পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে। তিস্তা ব্যারেজে পানি পাওয়া যাচ্ছে গড়ে দুই হাজার ৮০০ কিউসেক। এই পানি ছয় জেলার ৫৫ হাজার বোরো ধানের পানিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী পানির হিস্যা পাওয়া গেলে শুষ্ক মৌসুমেও তিস্তা ব্যারেজের ভাটিতে নদীতে পানিপ্রবাহ থাকতো।’
আপনার মতামত লিখুন :