ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫

নিয়োগ জালিয়াতির মামলায় মাদ্রাসা সুপার গ্রেপ্তার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় জালিয়াতি করে একই পদে দুই ব‍্যাক্তিকে নিয়োগ দেয়ার মামলায় কামাত আঙ্গারিয়া মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার বিবরন ও ভূক্তভোগীর নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ‍্যে জানা গেছে, দীর্ঘ ২২ বছর অফিস সহকারি পদে চাকরি করার পর জালিয়াতি করে গত ২০২৪ ইং এর আগস্ট মাসে অফিস সহকারি সফিয়ার রহমানকে এবতেদায়ী জুনিয়র শিক্ষক দেখিয়ে নতুন করে এমপিওভুক্ত করেন সুপার। অথচ অফিস সহকারী পদে ২০০২ সালে (ইনডেক্স ২৬৯২৩৩২) নিয়োগ পান মোঃ সফিয়ার রহমান এবং ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হন।

এদিকে, অফিস সহকারি পদ শূন‍্য দিখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উক্ত পদে (এসিও) মোঃ খালেদুজ্জামানকে ( সুপারের আপন ভাগিনা) নিয়োগ দেন। যার ইনডেক্স (গ০০৫৪১৮০), এমপিও ভুক্তির তারিখ মার্চ/২৪। তার জন্ম তারিখ ১৫/০২/১৯৭৮ ইং। সেই হিসেবে তার বর্তমান বয়স ৪৬ পেরিয়ে গেছে যা এমপিও ভুক্তির শর্তকে লঙ্ঘণ করে। মাদ্রাসার সুপার ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে তার আপন ভাতিজা মোস্তাফিজুর রহমানকে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগ বিধিমালায় নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক হলেও উক্ত ব্যক্তির কোনো নিবন্ধন সনদ নেই। সুপার অনলাইনে সার্চ দিয়ে একই নামীয় অন্য ব্যক্তির নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ০১/০৩/২০১৮ ইং তারিখে এমপিওভুক্তি করান এবং তার ইনডেক্স নম্বর (ঘ২১২১৭৮৩)।

অন্যদিকে, মাদরাসার কর্মচারী মজিবর রহমান গত ০৫/০৮/২০০০ ইং তারিখে এম.এল.এস.এস পদে যোগদান করেন এবং ২৫/১০/২০০১ ইং তারিখে এমপিও ভুক্ত হন। জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম তারিখ ভুল থাকায় এম.পিও কপিতে বেতন ভাতা আসলেও নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে একতরফা সিদ্ধান্তে গত প্রায় ৮ মাস থেকে তা স্থগিত করে রেখেছেন। এছাড়াও উক্ত কর্মচারীর চাকরী জীবনের ২২ বছর অতিক্রান্ত হলেও সুপার উচ্চতর স্কেল থেকে বঞ্চিত রেখেছেন।

শফিয়ার রহমান এর প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। পরে ভুক্তভোগী শফিয়ার রহমান এর বিচার চেয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আমলী আদালতে সুপার সাইদুর রহমানসহ ৯ জনকে বিবাদী করে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ভূরুঙ্গামারী থানাকে এফআইআর করতে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে মামলাটি এফআইআর ভুক্ত করে সোমবার দুপুর দুইটায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মাদ্রাসা সুপারকে আটক করে পুলিশ।

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ সুপার সাইদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের সত‍্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতারনার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।