কুষ্টিয়া শহরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও বেধড়ক মারপিট করা হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত চিহ্নিত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন শেষে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাংবাদিকরা।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার সময় কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গেটের সামনে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে কুষ্টিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। তারা দোষীদের আইনের আওতায় আনতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় কঠিন কর্মসূচি দেয়ার কথা জানান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেন রোববার সকাল সাড়ে ৯টার সময় কুষ্টিয়া শহরের ফুলতলা এলাকায় প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দূর্ঘটনায় স্কুল ছাত্র ইব্রাহিম (৬) নিহত হয়। এতে তার দাদী আহত হন। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে যায় ইমরান। “দৈনিক খবরওয়ালা” পত্রিকার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ চলাকালে চিহিৃত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী রকি (৩২) এবং আরিফুল (৩৩) সহ আরও ১০/১২ জন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং নাক, পিঠ ও মাথা কেটে রক্তাক্ত জখমের করে। যার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এছাড়াও ইমরান হোসেনের থাকা অফিসের ভিডিও ক্যামেরাসহ সরঞ্জাম ছিনিয়ে নেয় তারা। এরপর সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-মামুন সাগর বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের সামনে ন্যক্কারজনক হামলার শিকার হয়েছেন চিত্র সাংবাদিক ইমরান। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। চিহ্নিত হামলাকারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারে। তাহলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রোববার সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক ইমরানের ওপর হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে সে গুরুতর আহত হয়েছে। হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যেন আগামীতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিভিন্ন সময় এই ধরনের হামলার বিচার না হওয়ায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। দোষীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সাংবাদিকরা নির্বিঘ্নে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ইমরানের উপরে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়ার পুলিশ পুলিশ (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।