ঢাকা শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

৪ বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

আবু বকর সিদ্দিক বাবু, উল্লাপাড়া
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম

ফুলজোড় শাখা নদীর উপর আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সেতু নির্মিত হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিতলায় এর দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মান করা যাচ্ছে না। ৪ বছর আগে এই সেতুটির কাজ শেষ হয়। আর এতে দু’পাশের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ সেতু নির্মানের সুফল ভোগ করতে পারছেন না।

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামের মাঝে ফুলজোড় শাখা নদীর উপর এই সেতুটির কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। সেতুর কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের শেষের দিকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সেতুর দু’পাশে প্রায় ১০০ মিটার করে সংযোগ সড়ক নির্মান করা হবে। নির্মানযোগ্য সড়কের মোট ভূমির ৩৭ শতক জমি স্থানীয় ৭ ব্যক্তি মালিকের। এই জমি সংযোগ সড়কের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু ভূমি মালিকেরা কয়েক দফা নোটিশ পেলেও আজ পর্যন্ত তাদের জমির মূল্য বুঝে পাননি। ফলে তাদের ব্যক্তিগত জায়গায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মানে আপত্তি রয়েছে। মূলত এ কারণেই সেতু নির্মানের পর ৪ বছরেও দু’পাশে পাকা সংযোগ সড়ক নির্মান করা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, তাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে সড়াতৈল গ্রামে পাকা সেতু নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট জমির মালিকদের টাকা বুঝে না দেওয়ার কারণে জমি মালিকেরা সংযোগ সড়ক নির্মানে বাধা দিয়ে আসছে। ফলে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করে এলাকাবাসীর কাঙ্খিত সেতুটি নির্মাণ হলেও এটি দুই পাশের অন্তত ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারছেন না। বিশেষ করে স্থানীয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠানে যেতে খুবই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিএইচ বি এন্ড এলাই জেবি এন্টার প্রাইজ সেতু নির্মানের পরে সাময়িকভাবে ব্রিজটির উপর দিয়ে স্থানীয় লোকজনের যাতায়াতের জন্য কিছু মাটি ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে বর্ষা বৃষ্টিতে সে সব মাটি অনেকটাই ধুয়ে মুছে গেছে।

সড়াতৈল গ্রামের সংযোগ সড়কে অধিগ্রহণ করা ভূমি মালিক আশরাফুল ইসলাম জানান, তার ৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বার বার এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে সভা করলেও শুধু পাচ্ছেন টাকা পরিশোধের আশ্বাস। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দিব-দিচ্ছি করেই কর্তৃপক্ষ ৩ বছরেরও বেশি সময় পার করে দিয়েছে।

[33651]

একই এলাকার ভূমি মালিক শাহানাজ বেগম জানান, ফুলজোড় শাখা নদীর উপরে নির্মিত সেতুর একপাশের সংযোগ সড়কের জন্য তার নিকট থেকে ৮ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও এখন পর্যন্ত তিনি জমির মূল্য পাননি। আর এই কারণে অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকরা এখানে সংযোগ সড়ক নির্মানে বাধা দিচ্ছেন। তিনি অবিলম্বে তাদের পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন, শুধুমাত্র ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় উক্ত সড়ক সেতুর দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মান সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকেরা টাকা পেলে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মান করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সিরাজগঞ্জের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকে সিনিয়র সহকারী কমিশনার নুসরাত জাহানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে আপাতত তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছেন না।