সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ২১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। যার ফলে ভাষা আন্দলনের শহীদদের স্মরণ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মোট ২১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬টি। যেখানে শহীদ মিনার আছে ৫৫ টিতে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলে ৪০টি যার মধ্যে শহিদ মিনার আছে ৮টিতে। মাদ্রাসা ২০টি যার মধ্যে শহীদ মিনার নেই একটিতেও। কারিগরি কলেজ ৬টি যার মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৫টিতে এবং জেনারেল কলেজ ৮টি যার মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৫টিতে। তবে নওগাঁ জিন্দানি কলেজে নির্মাণাধী রয়েছে।
সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করার নির্দেশ থাকলেও এই ১৪৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করতে পারবে না নতুন প্রজন্ম। যার ফলে ভাষা আন্দলনের শহীদদের স্মরণ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না গড়ে ওঠায় গুরুত্ব হারাচ্ছে এই দিবসটি। একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনটিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয় সর্বস্তরের মানুষ। বাঁশ, কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দু চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
গুল্টা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রতি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও, গুল্টা বাজারে পাশাপাশি গুল্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুল্টা বাজার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অত্যান্ত গুরত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুইটি জনবহুল এলাকা হওয়ার পরেও এখানে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কোন শহীদ মিনার নেই। তাড়াশে একটি সরকারি কলেজও রয়েছে কিন্তু শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সেখানেও নেই কোন শহীদ মিনার।
বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিলা রানী দাস বলেন, সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না।
দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টিতে শহীদ মিনার আছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করছি।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরত্ব ছড়িয়ে দিতে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, আমাদের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
শহীদ মিনার প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমা বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে উপজেলা প্রশাসন থেকে এরমধ্যে তাগিদ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্ট তার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করছে। প্রতি বছরে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল থেকে শহীদ মিনার নির্মাণ করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর এডিপি, টি আর, কাবি খা`র বরাদ্দ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশি পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হবে, শহীদ মিনার নেই এমন প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ করার জন্য।
আপনার মতামত লিখুন :