‘ভাষার মাসেও মাটিতে পড়ে আছে শহীদ মিনার!’এই শিরোনামে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়ায় ১১ নং ফজলুল হক আকন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাটিতে পড়ে থাকা সেই শহীদ মিনারটি মেরামত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ওই শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি ওই বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার ছিল না। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হলে কাঠামোগত উন্নয়নসহ ২০২৩ সালে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের মূলভবনের পাশে ওয়াশব্লক নির্মাণের ফলে শহীদ মিনারটি সরিয়ে মিনারের স্তম্ভগুলো মাঠের এক কোণে দীর্ঘ এক বছর ধরে অযত্বে ফেলে রাখা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, একসময় তাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার ছিল না। সেসময় অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে কিংবা পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হতো। পরে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও উন্নয়ন কাজের জন্য তা সরিয়ে ফেলায় গত বছর এই দিনে তারা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি।
পরবর্তীতে চলতি মাসের ৯ তারিখে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার অনলাইনে এবং ১০ তারিখ প্রিন্ট ভার্সনে ওই শহীদ মিনার সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন করে জায়গা নির্ধারণ করে শহীদ মিনারটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং খুবই সীমিত সময়ে সকলের চেষ্টায় শহীদ মিনারটি শ্রদ্ধা জ্ঞাপণের উপযোগী করে তোলা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুল্লাহ প্রতিবেদককে জানান, ওয়াশব্লক নির্মাণকাজের জন্য জায়গা দিতে শহীদ মিনারটি সরানো হয়েছিল। তবে তাদের পরিকল্পনা ছিল শহীদ মিনারটি পুনঃনির্মাণের। তাই মিনারের স্তম্ভগুলো অক্ষত অবস্থায় রাখা হয়েছিল।

বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারের পূর্বের অবস্থা
দৈনিক রূপালী বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে তিনি মন্তব্য করে বলেন, গণমানুষের নানাধর্মী চাহিদা মিটায় গণমাধ্যম। গণমাধ্যমের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো জনগণকে প্রভাবিত করা এবং বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা।
তিনি বলেন, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর বিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় গুরুত্বসহকারে শহীদ মিনারটি পুনঃনির্মাণ করেন।
এ সময় আমাদের বর্তমান সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ নানামুখী ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
মাতৃভাষা প্রত্যেকটি জাতির জন্য আত্মপরিচয়। সেই পরিচয়ে পরিচিত হতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মায়ের ভাষার জন্য জীবনদানকারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে খুশি ফজলুল হক আকন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
আপনার মতামত লিখুন :