রাঙামাটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হচ্ছে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ।
এরপর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। দিনব্যাপী ছিল বিভিন্ন কর্মসূচি, যার মধ্যে অন্যতম ছিল আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণ।
[35184]
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং জেলা শিল্পকলার একাডেমি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতি ইনিস্টিটিউট ও জেলা শিশু একাডেমির যৌথ পরিচালনায় আজ (২১ ফেব্রুয়ারি) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী করা হয়।
জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা শহিদ এম আব্দুল আলী মঞ্চে দুপুরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তোলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, মাতৃভাষা খোদার সেরা দান, প্রতিটি মাতৃভাষায় গুরুত্বপূর্ণ। রাঙামাটিতে মাতৃভাষা দিবস পালন আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সরকারিভাবে ১৪টি জাতিগোষ্ঠীর বাস এখানে, এ ১৪ টি জনগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট মাতৃভাষা রয়েছে। প্রতিটি ভাষাকে আমাদের লালন করতে হবে, সমর্থন করতে হবে। আমরা চাইনা রাঙামাটি থেকে কোন জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষা হারিয়ে যাক। ইতিমধ্যে স্কুলে স্ব-স্ব মাতৃভাষায় পড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাহিরেও নিজস্ব মাতৃভাষা পড়া, চর্চা, কোচিং, ট্রেনিং কিংবা অন্য যেকোনো উদ্যোগে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
[35182]
এরআগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে চিত্রাঙ্কন, বর্ণমালা লিখন, রচনা ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, ছড়া ও কবিতা পাঠ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় কর্মসুচি পালন, শহিদদের জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের জন্য বিনা টিকেটে যাদুঘর, পর্যটনকেন্দ্র প্রদর্শনী এবং ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হয়েছে। এদিকে জেলার দশ উপজেলায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পৃথক কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ভাষা শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করে।