জাহাঙ্গীরের রিট খারিজ, পদক্ষেপে দেরি সমাজসেবার

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম

জাহাঙ্গীরের রিট খারিজ, পদক্ষেপে দেরি সমাজসেবার

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালে প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে করা সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর স্থগিতাদেশ দেওয়া রিট পিটিশন (১৬১০/২০২৩) খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। দীর্ঘ শুনানী শেষে বিবাদীর দেওয়া তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দোবাশীষ রায় চৌধুরী বিচার বিশ্লেষণ করে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর করা রিট আবেদন খারিজ করে দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার আহমেদ। তিনি বলেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানী ছিলো। শুনানীতে বাদি জাহাঙ্গীর চৌধুরী নিজেই রিট পিটিশন খারিজ করার আবেদন করেন। কিন্তু আদালত বাদীর করা আবেদনে সন্তুষ্ট না হয়ে বিবাদীর দেওয়া তথ্যউপাত্তে (মামলার মেরিট) সন্তুষ্ট হয়ে রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

তিনি আরও বলেন, আদালতের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল আলম বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে করা জাহাঙ্গীর চৌধুরীর রিট পিটিশন খারিজের বিষয়টি আমরা জেনেছি। কিন্তু পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাদের পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট প্রয়োজন। জাজমেন্টে আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিবেন সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডায়াবেটিক হাসপাতালের সদ্যঘোষিত কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডায়াবেটিক হাসপাতলে বৈধ কোনো কমিটি নাই এবং কমিটি অনুমোদনের জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ে কেউ আবেদনও করেন নি।

এই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, রিট পিটিশন খারিজ করার জন্য আমিই আবেদন করেছি। আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট পিটিশন খারিজ করেছেন। বর্তমান কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কমিটিকে তিনি নির্বাচিত কমিটি বলে জায়েজ করার চেষ্টা করেন। কবে আর কখন নির্বাচন হয়েছে এবং নির্বাচনের দৃশ্যমান কোনো দালিলিক প্রমাণ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কমিটি সিলেকশনের মাধ্যমে হয়েছে। নির্বাচিত কমিটি আর সিলেকশন কমিটি এক কি না জানতে চাইলে ক্ষেপে গিয়ে লাইন কেটে দেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে ডায়াবেটিক সমিতি। ২০১৮ সালের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই চলছে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল।  সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির নামে তিনি অবৈধভাবে একক নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ দুইযুগ ধরে হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছেন। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে আদালতে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল সাড়ে ২৭ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত জমা দেয়া হয়নি। চট্টগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশনেও জাহাঙ্গীর চৌধুরীর দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তাধীন।

আরবি/জেডআর

Link copied!